এভাবেও ভাল থাকা যায় (১০ম পর্ব)

মণিজিঞ্জির সান্যাল
মণিজিঞ্জির সান্যাল
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি প্রতীকী

অন্যের কাছে নিজের সমস্যার কথা বা দুর্বলতার কথা তুলে ধরার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই

জীবনে এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো নিয়ে কখনোই অন্যের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত নয়। এর ফলে নিজের সম্মান শুধু নষ্ট হয় না, নিজের দুর্বলতার দিকটিও প্রকাশ পায় প্রতিনিয়ত। কিছু মানুষ রয়েছেন দুদিনের আলাপেই জীবনের সব ব্যক্তিগত বিষয়কে তুলে ধরেন অন্য একজনের কাছে। নিজের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের কথা অপরিচিত একজন মানুষকে কেন বলতে যাবেন? ব্যক্তিগত বা পারিবারিক চিত্রকে কখনোই তুলে ধরা উচিত নয় বাইরের কোনো মানুষের কাছে। এমন কিছু কথা আছে যেগুলো কোনো অবস্থাতেই কারো কাছে প্রকাশ করতে নেই। যেমন, নিজের পরিবারের কথা, নিজের জীবনের কিছু গল্প, বিশেষ করে কিছু হারানোর কথা কারো সঙ্গে আলোচনা না করাই ভাল। এমন কিছু বিষয় আছে যা নিয়ে আলোচনা করা মানেই নিজের কাছে নিজের ক্ষতি করা। বিশেষ করে পারিবারিক ভুল ত্রুটির গল্প কখনোই কারো সাথে আলোচনা করতে নেই। এতে আপনার পরিবারের ঐতিহ্য যেটুকুই আছে, তাকে অন্যের কাছে তুলে ধরা মানেই আপনার পরিবারের চিত্র বাইরের কোনো একজনের কাছে পরিস্কার হয়ে গেল, পক্ষান্তরে এতে নিজের পরিবারকেই কিন্তু ছোট করা হলো।

দ্বিতীয়ত, যদি আপনি প্রবল অর্থ সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যান, সেসব কথা নিজের মধ্যেই রাখুন। এই যে আপনি একজনের কাছে নিজের অভাবের কথা বলছেন, এতে আপনার কি লাভ হচ্ছে একবারও ভেবে দেখেছেন? আপনার আর্থিক সঙ্কটের কথা শোনার পর কেউ কি আপনাকে সাহায্য করবে? নিশ্চয়ই না, আপনার পাশে দাঁড়াবেও না, দাঁড়ালেও তা হবে কপটতা। আপনি তাহলে একজন সাহায্যপ্রার্থী। সমাজ কিন্তু এই ধরনের মানুষকে সম্মান জানায় না, সবসময়ই আপনাকে অপর জনের কাছে দয়ার প্রার্থী বা কৃপাপ্রাথী হয়ে থাকতে হবে। তাই আর্থিক সমস্যা নিয়ে কখনো কারো সঙ্গে আলোচনা করবেন না।

তৃতীয়ত, আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ আছেন যারা প্রতিনিয়ত নিজের সমস্যার কথা একনাগাড়ে বলেই যান। হয়তো সত্যিই তার সমস্যা আছে কিন্তু মানুষকে না চিনে বা না জেনে তার কাছে নিজের কথা তুলে ধরার মধ্যে সত্যিই কোনো কৃতিত্ব আছে কি? সমস্যাটা আপনার, তাহলে সেই সমস্যার গল্প আর একজন শুনবে কেন? আর শুনলেই যে আপনার কোনো কাজে সে আসবে তাও নয়। ব্যক্তিগত সমস্যার কথা গোপন রাখাই উচিত। ব্যক্তিগত সমস্যার কথা সবাই জানলে আপনাকে নিয়ে আড়ালে আলোচনা করবে, উপহাস করবে। সবাই তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করবে।

- বিজ্ঞাপন -

এরপরের বিষয়টি হলো, নিজের স্ত্রী বা স্বামীর চরিত্র নিয়ে আলোচনা। অত্যন্ত অশোভনীয় অন্যের কাছে নিজের স্ত্রী বা স্বামীর চরিত্র নিয়ে আলোচনা করা। এই বিষয়টি একেবারেই কাম্য নয়। যারা একটু নিজস্ব বুদ্ধি নিয়ে চলেন তারা কখনোই এমনটা করেন না। কিছু মানুষ নিজের স্ত্রীকে নিয়ে সবার সামনে এমন চর্চা করেন এবং এমন কিছু বলে ফেলেন, যা একেবারেই শোভনীয় নয়। যার পরিণতি ভয়ানক হতে পারে। পাশাপাশি নিজের স্বামীকে নিয়ে আলোচনাও খুবই বিসদৃশ।

পরিশেষে, আরো যে একটি বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে তা হলো, কেউ যদি কখনো কোনো দুর্বল মানুষ বা অবহেলিতদের থেকে অপমানিত হয়ে থাকেন, তাহলে সে কথা নিজের কাছে গোপন রাখাই ভাল। এই ঘটনার বহিঃপ্রকাশ যেকোনো ব্যক্তিকে হাস্যকর উপদানে পরিণত করতে পারে যা আত্মসম্মানে ধাক্কা বা আঘাত লাগার জন্যে যথেষ্ট।

(চলবে)

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
মণিজিঞ্জির সান্যাল, বাংলা সাহিত্যে এম.এ., ক্ল্যাসিক্যাল নৃত্য প্রভাকর; জন্মদিন: ২৯শে বৈশাখ, ইং ১৩ই মে; জন্মস্থান: ভারতবর্ষ, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি। যে সব পত্র পত্রিকায় লিখেছেন: আনন্দবাজার, দেশ, সানন্দা, শুকতারা, কিশোর ভারতী, শিলাদিত্য, যুগ শঙ্খ, নন্দন, তথ্যকেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকা, উত্তরের সারাদিন, স্টেটসম্যান, অন্যদিন পত্রিকা (বাংলাদেশ), এছাড়া অসংখ্য লিটিল ম্যাগাজিনে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ভ্রমণ কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে। দেশের বাইরে কুয়েত, বাংলাদেশ, কানাডা, লন্ডন এমন অনেক বিদেশের পত্র পত্রিকায় নিয়মিত লেখা প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত বই: (১) একটুকু ছোঁয়া লাগে (কলকাতা থেকে প্রকাশিত) (২) স্বপ্নের পৃথিবী (কলকাতা থেকে প্রকাশিত) (৩) অতৃপ্ত আত্মার সঙ্গে (৪) সমুদ্র তোমার সঙ্গে (বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত) (৫) সম্পর্কের পরিচর্যা (বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত) (৬) কমলালেবুর রস নোনতা (কলকাতা থেকে প্রকাশিত) (৭) ভালোবাসার গোপন দরজা (৮) মাটির কাছাকাছি
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!