নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কামারগ্রামে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা পরিষদের সদস্যসহ ছয় জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ঐ কিশোরীর পিতা।
গতকাল বিকালে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের কামারগ্রামের ঐ কিশোরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে পার্শ্ববর্তী কাশিপুর গ্রামের আমিনুর শেখের ছেলে অন্তর শেখের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৫ জুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অন্তর শেখ ফোনের মাধ্যমে ঐ কিশোরীকে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে ডেকে ইজিবাইকে করে লাহুড়িয়া-কল্যাণপুরের দিকে নিয়ে যায়। পথে ভদ্রডাঙ্গা বাতাশি গ্রামের জোড়া ব্রিজ এলাকায় আগে থেকে অবস্থানরত মাধবহাটি গ্রামের নুর ইসলাম ফকিরের ছেলে লিকু ফকির ও কামারগ্রামের বাদশা শেখের ছেলে জামিরুল শেখ ও প্রেমিক অন্তর শেখ ঐ কিশোরীকে একটি পাটক্ষেতের মধ্যে নিয়ে মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় জামিরুল মোবাইল ফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে। বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখায়। পরে ধর্ষকরা ঐ কিশোরীকে অন্তরের ফুফাতো ভাই সরশুনা গ্রামের আজিজুল মুন্সীর বাড়িতে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে পরদিন সকালে পরিবারের লোকজন কিশোরীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
এদিকে নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য সরশুনা গ্রামের মিশাম শেখ ও কামারগ্রামের মাতুব্বর আশরাফুল শেখ ধর্ষণের ঘটনাটি ৬০ হাজার টাকায় মীমাংসা করে এবং এ বিষয়ে মামলা না করার জন্য ঐ কিশোরীর পিতার ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
এ ঘটনার ১০ দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় কিশোরীর পিতা মঙ্গলবার সকালে লোহাগড়া থানায় তিন ধর্ষক ও সালিশকারীসহ ছয় জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি ধর্ষক অন্তর শেখ, লিকু ফকির ও ইজিবাইক চালক তুষারকে বিকালে আটক করে।
জেলা পরিষদের সদস্য মিশাম শেখ জানান, ধর্ষণের বিষয়টি মীমাংসা করতে আমি চাপ প্রয়োগ করিনি। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে আসামি করা হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন জানিয়েছেন, আটককৃত আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি ঐ কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।