জেনেভাতে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সভায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা পুনরায় শুরু করতে এবং পারস্পরিক রাষ্ট্রদূতদেরকে ফেরত আনতে সম্মত হয়েছেন যদিও অনেক বিষয়ে তীব্র মতবিরোধ বর্তমান।
বুধবার, ১৬ জুন, পুতিন আর বাইডেন জেনেভাতে প্রথমবারের মত সভা করেন। শীর্ষ সম্মেলনটি ২ ঘণ্টার মত স্থায়ী হয়। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যাশিতই ছিল না। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হল। এবার বৈঠকে যোগ দিয়েছেন আমেরিকা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম অবনতির আবহেই বুধবার জেনেভার লুইস লেকসাইড সুইস ম্যানসনে বৈঠক করছেন জো বাইডেন এবং ভ্লাদিমির পুতিন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ গোয়েন্দারা নাক গলানোর অভিযোগ উঠেছিল। আমেরিকার সাইবার হানাতেও রুশ হ্যাকারদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। চিন ইস্যুতে রাশিয়ার ভূমিকা সন্দেহজনক বলে মনে করে ওয়াশিংটন। এই নানা প্রতিকূল আবহের মধ্যেই প্রথমবার মুখোমুখি হলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা এমন এক সময়ে বৈঠকে সম্মত হয়েছেন, যখন তাঁদের দেশগুলির মধ্যে সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সংবাদসংস্থা রয়টার্স এক আধিকারিকের মন্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে এই বৈঠকটি চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলতে পারে। সেই বৈঠক শুরু হয়েছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। বৈঠক শুরুর আগে হাত মেলালেন পুতিন এবং বাইডেন। খুব বেশিক্ষণ ক্যামেরার সামনে না থাকলেও কার্যত ইতিহাসের সাক্ষী হয় জেনেভা। উপস্থিত ছিলেন সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট গায় পারমেলিন।
উল্লেখ্য, শেষ কয়েক মাস ধরেই দুই দেশ একে অন্যকে নিশানা করে তীব্র বাক্যবাণ নিক্ষেপ করেছে। সব মিলিয়ে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে দুই দেশের মধ্যে। আমেরিকার স্বার্থে ঘা দিতে রাশিয়াভিত্তিক হ্যাকাররা সাইবার হানা চালিয়েছে বলে জোরালো অভিযোগ করে আসছেন বাইডেন। তবে এবার একে অপরের দিকে এগিয়ে আসেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। কয়েক মিনিটের কথোপকথন হয় ক্যামেরার সামনে। বাইডেনকে এই বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান পুতিন।
এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার তিনদিন আগে বাইডেন জানান, ‘আমি রাশিয়ার সঙ্গে কোনও সংঘর্ষে যাচ্ছি না। কিন্তু রাশিয়া যদি ক্ষতিকর কাজকর্ম চালিয়ে যায়, তার জবাব দেব আমরাও।’ এই বৈঠকেও একাধিক বিষয়ের মধ্যে আলোচনায় থাকতে পারে চিন। সূত্রের খবর, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি ইউক্রেন, বেলারুশ, কৌশলগত স্থিতিশীলতা, আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব–সংঘাত, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও কথা হতে পারে পুতিন–বাইডেনের।