নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৪নং কলম ইউনিয়নের পুন্ডুরী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর ছেলে মিঠু চাকুরির জন্য হন্য হয়ে ঘুরে নিরুপায়। জুটেনি একটা চাকুরী, অন্যের জমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর পরিবারের বসবাস করেন।
দিন আনে দিন খায় এমন অবস্থায় দিন কাটছে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের।সম্প্রতি পুন্ডুরী দাখিল মাদ্রাসার আয়া পদে নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মিঠুর স্ত্রী আবেদন করেন।গত শুক্রবার কলম উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচলক্ষ টাকার বিনিময়ে তহুরা নামে একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর পাঁচ কন্যা ও দুই পুত্র রেখে গেছেন। সে প্রকৃত একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। শেষ জীবনেও তিনি চানাচুর বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করেছেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় সংসার চালাতেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর সাত সন্তান বর্তমানে ভাতা গ্রহন করছেন। প্রায় তিন বছর আগে পুন্ডুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী পদে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মিঠু আবেদন করেন। কিন্তু তাঁর চাকুরী হয়নি। এবার আয়া পদে তাঁর স্ত্রী আবেদন করেও চাকুরী না হওয়ায় এ প্রতিবেদককে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মিঠু ও তাঁর স্ত্রী।
কান্না জড়িত কন্ঠে মিঠু জানান, ‘আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করে গেছেন। আমিও অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাই। আমার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে মৌ ক্লাস সেভেনে পড়ে। ছোট মেয়ে মাহিমা বয়স ছয় মাস, জন্মের পর নাড়িতে সমস্যা হওয়ায় এলাকাবাসির সহযোগিতায় ৬০ হাজার টাকা খরচে সুচিকিৎসা করানো হয়’।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মিঠুর স্ত্রী জানান, তাকে ‘সুপার ও স্থানীয় এক নেতা ডেকে নিয়ে বলেছিলো তিন লাখ টাকা দিলে চাকুরির ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। পরে শুনি তহুরা নামে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগের নেতা জানান, দলের দু একজন নেতা সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, বিএনপি পরিবারের দু জনকে কম্পিউটার অপারেটর ও আয়া পদে চাকুরী দিয়েছেন। এতে করে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু জানান, ‘মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর পরিবারটি বড়ই অসহায়। চাকুরী তাদের পাওয়া দরকার ছিল। নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। পরে শুনতে পেয়েছি অন্য জনের চাকুরী হয়েছে’।
মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন, সুপারের কাছে বারবার ঘুরেও কোনো ফল পাওয়ার অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের।