বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) বাদ দিয়ে বিকল্প চায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ইউএনওদের বিকল্প খুঁজতে এ সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া দিনের বেলা গার্ড অব অনার আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়। সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে, বৈঠকে একজন সদস্য বলেছেন, সাধারণত নারীরা জানাজায় অংশ নেন না। এটি নিয়ে সমাজে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে যেখানে নারী ইউএনও আছেন, সেখানে বিকল্প একজন পুরুষ কর্মকর্তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বা এ ধরনের কোনো কর্মকর্তাকে বিকল্প রাখা যেতে পারে। এরপর কমিটি ওই সুপারিশ করে।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন ও মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশ নেন।
সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে থাকেন। কফিনে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
দেশের অনেক জায়গায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন নারী কর্মকর্তারা, আর সেখানেই আপত্তি তুলেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানের ক্ষেত্রে দিনের বেলায় আয়োজন করা এবং নারী ইউএনওর বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
কোন যুক্তিতে এই সুপারিশ জানতে চাইলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান জানান, নারী ইউএনও গার্ড অব অনার দিতে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। নারীরা তো জানাজায় থাকতে পারেন না। সেক্ষেত্রে নারী গার্ড অব অনার দেন, সেই ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা হয়।
গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিকল্প একটি প্রস্তাবও দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
শাজাহান খান বলেন, বৈঠকে একটি প্রস্তাব এসেছে। নারীর বিকল্প একজন পুরুষকে দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়ার বিষয়টি এসেছে। আমরা মন্ত্রণালয়কে এটা পরীক্ষা করে দেখতে বলেছি।
এর আগে বিয়ে নিবন্ধনে নারীরা কাজী হতে পারবে না বলে আইন মন্ত্রণালয় একটি সিদ্ধান্ত আদালত অবধি গড়িয়েছিল। হাই কোর্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষে রায় দিলেও সংক্ষুব্ধ পক্ষ আপিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।