আমাদের ভোটকেন্দ্র দেবেন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে যখন বাস থামল, তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। রাইফেলধারী জওয়ানরা আমাদের হলঘরটি দেখিয়ে দিল। ইভিএম, ব্যালট ইউনিট, কণ্ট্রোল ইউনিট -সব গুছিয়ে বসতেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। প্রিসাইডিং অফিসার বলেই দিলেন, ” আপনারা ভোটার স্লিপ- এ স্ট্যাম্প লাগিয়ে সই-সাবুদ সেরে, মেল-ফিমেল চার্ট রেডি করে ফেলুন। আমার তো জানেনই কাজের পাহাড়, সব সারতে রাত কাবার!”
শেষরাতে উঠে স্নান-খাওয়া সেরে নিয়ে রেডি হলাম। দেখি প্রিসাইডিং – স্যার বারান্দার গ্রিলে আড়াআড়িভাবে নাইলনের দড়ি টাঙিয়ে জামা-প্যাণ্ট-গেঞ্জি- গামছা শুকোতে দিলেন। মক পোলিং- এর পর ভোট শুরু হল। স্যার আমার কাছে এসে বললেন, “দড়িতে দেওয়া পোশাকগুলোর দিকে একটু নজর রাখবেন তো!”
সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় ভোট শেষ। সাতটায় জিনিষপত্র গুছিয়ে নিয়ে সবেমাত্র বাসে উঠেছি, দেখি প্রিসাইডিং – স্যার বাস থেকে নেমে পড়ে দৌড় লাগালেন স্কু্লের দিকে। একে ফরটিসেভেন হাতেএকজন জওয়ানও তাঁর পিছু নিল। একটু পরেই অবশ্য ফিরে এলেন তিনি। জিজ্ঞেস করলাম, “কি হলো স্যার! জামা-প্যাণ্ট সবই তো গুছিয়ে নিয়েছিলেন , তাহলে ওইভাবে দৌড়লেন কেন?”
হাঁপাতে হাঁপাতে তিনি বললেন,” আরে ওসব নিলে কী হবে, এই যে এই দড়িটা নিতেই তো ভুলে গিয়েছিলাম!”