নাটোরের লালপুর থানা চত্বরে পুলিশ ও জনতার সম্মিলনে হয়ে গেলো আম-মুড়ি উৎসব। উন্মুক্ত মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন পুলিশ-জনতা। সবার হাতে প্লেটভর্তি ক্ষীরশাপাতি আম ও মুড়ি। আম চিপে মুড়ি ভিজিয়ে হাপুসহুপুস করে খাওয়া শুরু করলেন একসঙ্গে।
যার যতটুকু দরকার, তিনি ততটুকু করে খেলেন। নাটোরের লালপুর থানা চত্বরে আম খাওয়ার এমন দৃশ্য ছিলো নজর কেড়ে নেওয়ারই মতো। সবারই যখন নিজ নিজ বাসায় বসে বিকেলের নাশতা করার কথা, লালপুর থানা চত্বরে অনুষ্ঠিত হলো ‘গণনাশতা’।
থানা কর্তৃপক্ষের দাবি, এটা আসলে গতানুগতিক নাশতা নয়, এটা একটা উৎসব। স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে খোলা জায়গায় এই আয়োজন। উৎসবে অংশগ্রহণ ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। এতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) থেকে শুরু করে কনস্টেবল ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন।
এমনকি অংশ নেন থানা হাজতে থাকা আসামি ও দর্শনার্থীরাও।সুমিষ্ট ক্ষীরশাপাতি আম ও মুড়ি রাখা ছিল এক জায়গায়। যার যতটুকু ইচ্ছা, তিনি ততটুকু নিয়ে খেয়েছেন। খেতে খেতে গল্পে মেতে উঠেছেন। মা-দাদির হাতে আম-মুড়ি খাওয়ার গল্প মনে করে অনেকে প্রিয়জনদের কথা স্মরণ করেছেন।
লালপুর থানার (এসআই) কৃষ্ণকুমার বলেন, পুলিশকে সারাক্ষণ কোনো না কোনো কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকতে হয়।এতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যেমন আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠা হয় না, তেমনি সহকর্মীদের সঙ্গেও আনন্দ করার সময় পাওয়া যায় না। বিশেষ করে করোনাকালে তারা যেন ‘রোবট’ হয়ে গেছেন। আম-মুড়ি উৎসব এই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হলেও বের হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে।
লালপুর থানার ওসি (তদন্ত) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, করোনা এসে তাদের কাজ যেন বেড়ে গেছে। নিয়মিত কাজের বাইরে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ প্রতিপালনেও তাদের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। ফলে সবার মধ্যে একঘেয়েমি কাজ করছিলো।একঘেয়েমি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই আম-মুড়ির আয়োজন। এই আয়োজন সফল হয়েছে। এখন তারা আবার কাজে মনোযোগ দেবেন।
লালপুর থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, ‘ইচ্ছা থাকলেও সময়ের অভাবে আমরা মা-বাবার কাছে বসে আম-মুড়ি খেতে পারি না। অথচ আমের এখন ভরা মৌসুম। তাই সবাই মিলে আম-মুড়ি খাওয়ার মধ্য দিয়ে পারিবারিক আনন্দ উপভোগ করেছি। এতে সবার মাঝে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় হয়েছে। আর এটাকে উৎসবের রং দিতে গিয়ে আমরা থানার হাজতিসহ উপস্থিত সবাইকে যুক্ত করেছি। তাতে আনন্দটা সবার মাঝে ভাগাভাগি হয়েছে।