মিসেস রুমানা রহমান নামের এক ফেসবুক আইডি’র সঙ্গে ঢাকা শহরের এক ভদ্রলোক প্রায় আড়াই মাস সংযুক্ত ছিলেন। ভদ্রমহিলা নিজেকে সাভারের ইব্রাহিম হাসপাতালের একজন ডাক্তারের সহকারী হিসেবে চাকরি করেন বলে পরিচয় দেন। আনুমানিক আড়াই মাস ধরে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা হওয়ার পর ভদ্রমহিলা ঐ ভদ্রলোককে তার বাসায় আমন্ত্রণ জানান। বাসায় তিনি তার শাশুড়ির সঙ্গে থাকেন বলেছিলেন।
ভদ্রলোক গতকাল, ৭ জুন ২০২১, আনুমানিক বেলা ১১:০০-১১:৩০ টার মধ্যে ঐ বাসায় প্রবেশ করেন। বাসার লোকেশন: সাভার বাজার রোডের বিলাস সিনেমার সামনে থেকে রিক্সায় ডেন বাজার। সাভার বাজার থেকে যেতে ডেন বাজার রাস্তার ডান হাতে নতুন নীল রঙ করা ৬ তলা বাড়ি। (বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে যাওয়া রাস্তায় কয়েকটি দোকানপাট আছে।) এই বাড়ির ৫ম তলায় থাকেন মিসেস রুমানা রহমান তার পরিবার নিয়ে।
বাসায় প্রবেশ করে ভদ্রলোক বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে পরিবেশিত নাস্তা খাওয়া শুরু করা মাত্রই বাসার দরজায় কেউ নক করেন এবং একজন যুবক প্রবেশ করে ভদ্রলোকের পরিচয় জানতে চান। ভদ্রমহিলা আগত অতিথিকে তার আত্মীয় বলে পরিচয় দেন। ছেলেটি বলে যে ভদ্রলোকটি বিল্ডিঙয়ে প্রবেশের আগে এদিক সেদিন তাকাচ্ছিলেন তাই দেখে তার সন্দেহ হওয়ায় সে বাসায় প্রবেশ করেছে। ছেলেটি রুমানা রহমানকে বলে “ভদ্রলোক যদি আপনার আত্মীয় হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার স্বামীকে ফোন করুন। আমি তার সঙ্গে কথা বলব। এইটুকু কথা হতে হতেই অপর এক যুবক ঘরে প্রবেশ করে। এবার ভদ্রমহিলার কাছ থেকে দ্বিতীয় যুবক – মাঝারি সাইজের দাড়িওয়ালা, জিন্স আর পোলো শার্ট পরিহিত সুঠামদেহী মধ্যম উচ্চতার ব্যক্তি যার নাম পরে ‘রেজা’ বলে বলে – ফোনটা ভদ্রমহিলার কাছ থেকে নিয়ে নেন। ফোনে তার ফেসবুক দেখতে থাকেন। ভদ্রলোকের নাম জিজ্ঞেস করে, ভদ্রলোকের সঙ্গে ফেসবুকে তার কথপোকথন দেখতে থাকেন। এরপর যুবক দুইজন দাবি করেন যে ভদ্রলোক ভদ্র মহিলার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করতে এসেছেন। ফোনে কল করে ভাব দেখায় যে থানার ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলছে, তাকে ঘটনাস্থলে আসার জন্যে অনুরোধ করে।
এরপর, যুবক দুইজন ভদ্রলোককে উত্তম-মধ্যম দিয়ে উলঙ্গ করে ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়া, ভিকটিম ভদ্রলোকের ফোনও তারা জোরপূর্বক নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় এবং ভদ্রলোকের আত্মীয় বন্ধুদেরকে ফোন করে জানিয়ে তাঁর মান-ইজ্জত নষ্ট করার হুমকি দিয়ে ভদ্রলোক এবং ভদ্রমহিলা উভয়ের কাছে টাকা দাবি করে। এর মধ্যে আরও এক যুবক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা ভদ্রলোককে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
পরবর্তীতে তারা ঐ ভদ্রলোককে তাঁর ক্রেডিট কার্ড থেকে তাদের বিকাশ হিসাবে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বাধ্য করে।
এই ২০ হাজার টাকা তাদের বিকাশ হিসাবে জোরপূর্বক নিয়ে নেয়ার পর তাকে ঐ বাসা থেকে মুক্তি দেয়া হয় সেদিন বেলা ২টার দিকে।
এই ঘটনার বর্ণনা থেকে এটি পরিষ্কার যে, মিসেস রুমানা রহমান প্রকৃতপক্ষে ঐ ছিনতাইকারী চক্রের একজন সদস্য। ধারণা করা যায় যে এটি তারা দীর্ঘদিন যাবত করে যাচ্ছে। নির্যাতিত ব্যক্তিরা সামাজিক সম্মানহানীর ভয়ে হয়ত অভিযোগ করে না। এদেরকে প্রতিহত না করলে তারা এটি করতেই থাকবে, আরও অনেকে তাদের হাতে নির্যাতিত ও নিঃস্ব হবে।
ঐ ৪ সদস্যের চক্রের মধ্যে দুজনের সম্পর্কে যতটুকু জানা গিয়েছে তার তথ্য নিচে দেয়া হল। সদস্য হয়ত আরও থাকতে পারে তবে ৪ জন সরাসরি একশনে ছিল।
ভদ্র লোকটিকে নির্যাতন এবং ছিনতাই কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়া ‘রেজা’ নামে পরিচয় দেয়া ব্যক্তির ফোন নং: ০১৯৪০৯৭১৬৯৮। মিসেস রুমানা রহমানের ফোন নং: ০১৬৪২২৮৭৭৬৯। এই দুটি নম্বরে ফোন করে নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মিসেস রুমানা রহমানের এই ফেসবুক আইডি থেকে ভিকটিম ভদ্রলোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। https://www.facebook.com/profile.php?id=100065088287544