জীবন গোধূলিতে
বয়েস হলে
বেশি কথা ভাল লাগে না।
বয়েস হলে
নীরবে দেখতে ভাল লাগে।
তর্ক বিতর্কে একজন দর্শক।
বয়েস হলে
ফেলে আসা জীবন
ভালোবাসাহীন বেলা অবেলা
কোয়েল নদী পাহাড়ি মেঘ শালের জঙল
জাবর কাটতে ভাল লাগে।
যে সময়ের যে খেলা
লোকে ভাবছে বয়েস হয়েছে
আসলে সে খেলছে
সোনালী আলো মেখে
পাখি যেমন ডানা মেলে আকাশ নাড়ায়।
মৃত্যু যন্ত্রণা
ডাক্তার হাল ছেড়েছে বছর তিন পরে
সাপোর্ট সিস্টেমে যতদিন কাজ করে।
ওষুধ আসেনি পৃথিবীতে
এই মরণ রোগের
এসব আমাদের থেকে
বেশি জানা আছে মেয়ের।
সে করুণ দৃষ্টিতে সান্ত্বনা দেয়
মেয়ে চলে যাবে চিরদিনের হাসি নিয়ে
একটু একটু করে ক্ষত যন্ত্রণায়
মরতে মরতে আমরা মরবো গিয়ে।
ফেরারি মন
যতবার ভেবেছি এসে গেছি
দেখি ভুল দরজায় কড়া নেড়েছি
যতবার পেয়েছি ঠিকানা
দেখি ভুল রাস্তায় নাম না জানা ।
আসলে আমি মনে মনে জানি
পেয়ে যাবো একদিন ঠিক
আমার রাস্তা দরজা কোনদিক
আমার অন্য দেশে বাড়ি
দু-দণ্ড শান্তি তারপর ছাড়াছাড়ি ।
আসলে আমি মনে মনে জানি
ফেরারি পাখি ফিরবে না ঘরে
সব মানুষই ফেরে না চরাচরে
তাই খোঁজে মন পাবে না যারে
শেষ হলে কি আর খুঁজবে তারে !
রূপকথা
বৃষ্টি তুমি শুনতে কি পাও
বৃষ্টির রূপকথা !
রূপকথা তুমি বুঝতে কি পারো
সেই অজানা ব্যথা!
রূপকথা তুমি দেখেছো কি কোনোদন
মাধবীলতা কি করে পাঁপড়ী মেলে !
যেমন করে রাত্রির শেষে রাত্রি যায় চলে
যেমন আমাদের দিন যায় ঢলে।
আমি ভাল নেই
দিনান্তের কনে দেখা আলোয়
অস্তরাগের পাখি ফেরে নীড়ে
শেষ হেমন্তের গোধূলি
কবেকার সেই চেনা গন্ধ কুয়াশা
আমি ভাল নেই বহুদিন
তুমি ভাল থেকো শীত।
চাঁদ তুমি এসো শালের জঙলে
এসো বাউলের দল জয়দেবের মেলায়
মাঝি কতদিন যাওনি ঘরে
ধান কেটে নিয়ে গেছে চাষী
পিঠে পায়েসের আয়োজন মাটির উনুনে
তবু যার ঘরে জ্বলেনি বাতি
জোনাকিরা যাবে ঝাঁক বেধে।
আমি ভাল নেই বহুদিন
তুমি ভাল থেকো শীত।
ফুল ঝরে যায়
কোথাও এখনও নির্জনে
ফুল ফোটে
সকালে ঝরে যায়।
কোথাও এখনও কেউ
ঘরে বসে নিরালায়
মালা গেঁথে পরায়।
সব কিছু হায়
অভিমান ক্ষত হয়ে বেরায়
ভালোবাসা পথে লুটায়।
ফুল তবু ঝরে যায়।