প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে পুড়িয়ে মারলো ছেলে-নাতি-নাতজামাই। ঘটনাটি ঘটেছে নড়াইলের কালিয়ায় এবং নিহত বৃদ্ধার নাম ছালেহা বেগম (৭৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত আরিফ (বৃদ্ধার বড়ছেলে) মামলার আসামিদের ফাঁসাতেই ম্যাকে পুড়িয়ে মেরেছে আরিফ হত্যা মামলার বাদিসহ তার পরিবারের লোকজন। এ বিষয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের দুই পুত্রবধূ আদালতে লোমহর্ষক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃদ্ধার পুত্রবধূদের আদালতে দেওয়া জবানবন্দির ঘটনা শুক্রবার (৪ জুন) বিকালে জানাজানি হলে ঘটনাটি ট্যক অব দ্য টাউন এ পরিণত হয়। ওই জবানবন্দির মধ্য দিয়ে বৃদ্ধা ছালেহা বেগম হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
কালিয়া থানা পুলিশ জানায়, গত ২২ মে রাতে উপজেলার জামরিলডাঙ্গা গ্রামের আগুনে পুড়িয়ে বৃদ্ধা ছালেহা বেগমকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় নিহতের দুই পুত্রবধূ নারগিস বেগম ও কুলসুম বেগম ঘটনার বিষয়ে নড়াইল আমলী আদালতে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) ও শুক্রবার (৪ জুন) জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে তারা বলেছে প্রায় ৮ মাস পূর্বে গ্রাম্য দলাদলি ও বিবাদের কারণে কুলসুমের ( নিহত বৃদ্ধারছোট পুত্রবধূ) স্বামী আরিফ খন্দকারকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। আরিফ হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে তাদের পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে। তার জের ধরে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে আরিফ হত্যা মামলার আসামিদের মারামারি হয়। ওই মারামারির ঘটনায় আরিফ হত্যা মামলার বাদিসহ তার পক্ষের লোকজনের নামে আসামিরা মামলা দেয়।
এরপর গত ২২মে রাত ১ টার দিকে বৃদ্ধার ছোটছেলে ইরোপ, নাতি রাশেদ ও নাতজামাই মিরাজ সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন ছালেহা বেগমের বিছানায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে রাশেদকে আগুন জ্বালাতে দেখেছে নারগিছ (বড় পুত্রবধূ) বলে জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এর আগে গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুলসুমের স্বামী আরিফ খন্দকারকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহত আরিফের ভাই ইরোপ খন্দকার বাদি হয়ে একই গ্রামের আকছির মোল্যাসহ ২৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে তাদের পরিবার ও সমর্থকদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানিসহ হুমকি দিয়ে আসছিল। ওই সময় আরিফ হত্যা মামলার আসামি রাহুল মোল্যাকে বাদির সমর্থকরা মারপিট করলে গত ২০ মে আহত রাহুলের মা ঝর্না বেগম বাদি হয়ে ইরোপ খন্দকারসহ ৮ জনের নামে কালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এরপরই ঘটেছে বৃদ্ধা ছালেহা বেগমকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা।
এ ঘটনায়, নিহতের মেয়ে মিনি বেগম বাদি হয়ে গত ২৫ মে আরিফ হত্যা মামলার আসামি আকসির ও মনিরুল মোল্যাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনকে আসামি করে কালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।