নাটোরে ২৪ ঘন্টায় আরো ১ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছে, সেই হিসাবে আক্রান্তের হার ৫১ শতাংশ।
এনিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ১৮০০ জন পূর্ণ হলো। এছাড়া আজকের একজনসহ জেলায় মোট মৃত্যু ২৬ জন। আজকে যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন করনা আক্রান্ত হয়ে, সেই ব্যক্তির নাম শুভেন্দু সরকার (৬৫)। গতরাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
সচেতন সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, ভয়াবহ সংক্রমনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে নাটোর। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি নজর নেই সাধারন মানুষের। হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের হার তুঙ্গে। গত সপ্তাহে ৩২৫ জন এর নমুনা পরীক্ষা করে ১৩০ জনের করনা সংক্রমিত হয়েছিলো।
পরিসংখ্যান বলছে, ১১ মে থেকে ১৬মে এক সপ্তাহে মোট ১৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ১৭ মে থেকে ২৩ মে এক সপ্তাহে হঠাৎ করেই করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৪৯জন। ২৪ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত করনা রোগীর সংখ্যা ১৩০জন। গতকাল ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জন আক্রান্তের ফলাফল আসেছিল। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাহিরে বের না হবার পরামর্শ সচেতন সমাজের প্রতিনিধিদের।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার কাজী মিজানুর রহমান জানান, করোনা মোকাবেলায় প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। জনগণকে বুঝতে হবে, তাদের ঘরে থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবেনা। আমরা প্রশাসনের সার্বিক সহায়তায় এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য বিভাগ গতকাল একটি বৈঠক থেকে নাটোর শহর সীমান্তবর্তী সাত জেলায় সাত দিনের লকডাউন সুপারিশ করেছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নাটোরে প্রশাসনের কঠোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। হঠাৎ করে গত সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এবং পুলিশের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানালেন তিনি ।
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ জানান, করোনার বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সব সময় জনগণের পাশে আছে আমরা মাইকিং সহ নিয়মিত মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। প্রশাসনের সকল বিভাগ একযোগে আমরা মাঠে রয়েছি। জনগণকে বিষয়টি বুঝতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে হবে। শহরের ভেতর চলাচল নিষিদ্ধ ও আক্রান্তদের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙানো এবং সেই সমস্ত বাড়ি থেকে লোকজন যাতে বাইরে বের না হতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
জনসমাগম কমাতে শহরের কানাইখালি এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। আরও দু’একদিন করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি দেখে পরবর্তী প্রদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন জেলা প্রশাসক।