আমরা পালিয়ে আসা লোক। থাকি অনেক দূর। সমুদ্র থেকে পাঁচশো মাইল। আমাদের এলাকায় ঝড় বাদল তুফান হয় না। আইলা বুলবুল হুদহুদ ক্যাটেরিনা সোফিয়া কিচ্ছু নেই। খবরের কাগজে পড়ি, টিভিতে দেখি এসব। নিজের চোখে যাতে দেখতে না-হয় তার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল বাবা। ভোলা নাথ ঘোষ। বাবার নামটাই ঝড়ের। ভোলা, দশ লক্ষ মানুষ মেরে ছারখার করে দিয়েছিল ওই দেশটা। এখন যেটা বাংলাদেশ।
ঠাকুরদার হাত ধরে বাবারা পালিয়ে এল ইনডিয়ায়। এদিকওদিক ঠোক্কর খেয়ে শেষে এই জায়গা। নিরাপদ স্থান। ধারে কাছে সমুদ্র নেই। ঝড় বাদল সাইক্লোন তুফান দেখিনি জন্ম ইস্তক।
তবে গতকাল দেখলাম। একটা ঝড় উঠেছিল। তিন মিনিটের ত্রনাডো, কেউ বলল টরন্যাডো। যা’হক এখানকার সব তছনছ। দোতলা তিনতলা বাড়িগুলো মুখ থুবড়ে মাটিতে। বৌ-ছেলে নিয়ে আমি বেঁচে গেছি।
সবাই মিলে ধ্বংসস্তুপ ঘাঁটছি। পরিচয় পত্র তো খুঁজে পেতে হবে। আধার, ভোটার কার্ড। না-পেলে সর্বনাশ।
বাপ-ঠাকুর্দা নেই। কার হাত ধরে অন্য দেশে ঠাই খুঁজতে যাবো!