গাজীপুরের কাশিমপুরে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে স্ত্রী আরিফা বেগম (২৪) ও তার পরকীয়া প্রেমিক তনয় সরকার (৩১)। এর আগে আরিফা স্বামী সুমন মোল্ল্যাকে (২৮) দুধের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অজ্ঞান করে।
এখনেই শেষ নয়, স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বাজার থেকে একটি নতুন করাত কিনে এনে দেহটিকে টুকরা টুকরা করা হয়। হাত-পা ও মাথা আলাদা করে দেহাংশটি সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। পর দিন হাত-পা ও মাথার ৫ টুকরা অংশ একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
শনিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
এ সময় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ, এসি ডিবি রিপন চন্দ্র ও কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদা উপস্থিত ছিলেন।
জাকির হাসান আরও জানান, গত ২১ এপ্রিল মেট্রোপলিটনের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় এলাকায় জনৈক জামাল উদ্দিনের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা ও মাথাবিহীন অজ্ঞাত পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২২ এপ্রিল অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে কাশিমপুর থানায় মামলা করা হয়।
মামলাটি দীর্ঘ তদন্তের পর নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। নিহত সুমন মোল্ল্যা বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার গোলা বরণীবাজার এলাকার জাফর মোল্লার ছেলে। সুমন ও আরিফা স্বেচ্ছায় বিয়ে করে কাশিমপুরের সারদাগঞ্জের হাজীর মার্কেট এলাকার মাওলানা শফিউল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
এরই মধ্যে আরিফা একই এলাকার ভাড়াটিয়া তনয় সরকারের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়ায়। এ নিয়ে তনয় ও আরিফার সঙ্গে সুমনের বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং তারা সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ওই পরিকল্পনা মতে আরিফা ২১ এপ্রিল রাতে সুমনকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ১০টি ট্যাবলেট মিশিয়ে অচেতন করে ফোনে তনয় সরকারকে বাসায় ডেকে আনে। পরে তারা সুমনকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে এবং বাজার থেকে একটি করাত ও চাপাতি কিনে এনে সুমনের লাশ থেকে হাত-পা ও মাথা আলাদা করে।
তারা ওই রাতেই পার্শ্ববর্তী জালাল উদ্দিনের সেপটিক ট্যাংকে সুমনের মাথাবিহীন দেহটি ফেলে দেয় এবং পর দিন দেহের অবশিষ্ট অংশ প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে হাজীর মার্কেট পুকুরপাড় ময়লার স্তূপে ফেলে। পুলিশ ২৯ এপ্রিল ভোরে ঘাতক প্রেমিক তনয় সরকার ও আরিফাকে গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেয় বলে জানান জাকির হাসান।