এক একটা জীব
যার যা নাম সেটাই তার প্রকৃত পরিচয় নাকি?
তা হলে অভ্যাসেরা কোথায় যায়?
ব্যবহারেরা কোথায় যায়?
সব ঋতুগুলিই বৈশিষ্ট্যে সমন্বিত
ক্রিয়া ও বিশেষণে নারীর মহিমা
শুধু উপমায় লাগে চাঁদ
জ্যোৎস্নারা কে জানে চাঁদের কান্না কিনা!
মেঘ যদি মেঘদূত হয়
কেউ তবে ভোরেরও ভৈরবী
মানুষের ভেতরে মানুষ
মানুষের ভেতরে দেবতা
মানুষের ভেতরে হিংস্রতা
আলো-অন্ধকার প্রান্তরে
অনন্ত আদিম এক একটা জীব
এক একটা নাম নিয়ে উঠে আসে
আবার ডুবে যায়
কাপড় পরে, অথবা পরে না।
সস্তা
পরম একাকী হয়ে শুয়ে আছি শীতে
খড়ের বিছানা রোজ আগুনকে ডাকে
এখানে আগুন সব নেতাদের হাতে
আগুনের মার্বেল খেলে আর বিড়ি ফোঁকে
আমাদের কাঁথা নেই, নিরাপত্তা আসে না
ঠক ঠক জ্বরে কাঁপা মুখে গল্প শোনাই
দূরের আকাশ আর নীরব কল্পনা
সান্ধ্য শকুন হয়ে নেমে আসে ভয়
চুপচাপ চোখ বুজে ঈশ্বরের নাম
খদ্দেররা বুঝে গেছে আমাদের দাম!
সময়ের থাবার নীচে
বেঁচে থাকাই একটা অপমানের মতো
একটা একটা কাঁটা তুলে রাস্তা হাঁটি
আর রাস্তায় সব ভ্রু ভঙ্গি
কোথায় শুকোবো ক্ষত?
ক্ষত শুকোবার দিন চলে গেছে
আজ সব ক্ষতচিহ্ন দংশনের দাগ
সময়ের থাবার নীচে আত্মগোপনের প্রয়াস
শুধুই গর্জন তার প্রগলভ ঝড়
হন্তারক হয়ে নামে রাক্ষুসী আঁধার
সম্ভ্রমের সব পাতা ঝরে গেলে গ্রীষ্মের গাছ
নিঃসঙ্গ চৈত্রের বাতাসে লেখে হাহাকার
সময়ের শূন্য নদীতে ভাসে জ্যোৎস্নার হাড়।
সৌভাগ্য
সৌভাগ্যের দরজার কাছে বসে থাকি
একবার এসেও দ্যাখে না;
সারারাত কাঁদছে আকাশ
কত নক্ষত্র ঝরে গেল
পাহাড়ে ও বনে ডাকছে নিশাচর।
স্বপ্নের বিছানায় সৌভাগ্য কি ঘুমুচ্ছে এখন?
আলতা রাঙা পায়ে তার সুষমা বৈভব
চুলেও লেগেছে রঙ্ বিদ্যুৎবেলার।
হাওয়া বইছে ওর জানালায়, খুব ভালো হাওয়া
চাঁদ একা চুপিচুপি চুম্বন পাঠায়…
বসে আছি, অবিশ্রান্ত
রাত বেড়ে যাচ্ছে জীবনের ভেতরে বাহিরে
থেকে থেকে ডাকছে ক্লান্ত নিশাচর
ভালো আছি
অন্ধকারে সব ক্ষত ধুয়ে নিই
তারপর নক্ষত্রের আলোয় ঢেকে রাখি
সভ্যতায় আমিও চুপিচুপি
হতে চাই বিজয়ী
রক্ত ক্ষরণের সেই গোপন প্রবাহ
এখনও ঘুমায় বুকে
টের পাও কেউ? কেউ টের পাও?
ভালো আছি, ভালো আছি
সমস্ত অবিশ্বাসের কাছে আমিও বিশ্বস্ত গান
গেয়ে চলে গেছি
দূর রাস্তার ধারে যেখানে ঔরস এক
মানবিক বোধ চায় অথবা পড়তে আসে বোধের স্কুলে
সেও জানে প্রজাপতি মরে গেলে
ফুল ঝরে যায় তার শোকে
অনাবিষ্কৃত
পথের পাশেই এক পথ পড়ে থাকে
তাকে কেউ আবিষ্কার করে না
মানুষের ভেতর আর এক মানুষ
তাকে কেউ চিনতে চায় না
প্রতিদিন অনাবিষ্কৃত এবং অচেনা
অন্ধকার সেখানে খেলা করে
পাথর ও কাঁটাগাছ জন্মায়
লাল টুকটুকে বন্য ফুল ফোটে
আমরা শীতে আপেল খেতে খেতে
একপাল পায়রার ওঠানামা দেখি
কেউ কেউ নারী হয়ে যায়
কেউ কেউ বেড়াল
কারোরই পোশাক নেই
কেউ কেউ নিতান্ত বাউল
আলো-আঁধারির একতারায় সুর কেটে কেটে যায়