সন্তানের কান্না শুনে মৃত্যুর চার ঘণ্টা পরেও বেঁচে উঠলেন মা

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
2 মিনিটে পড়ুন

হংকংয়ের কুইনস এলিজাবেথ হাসপাতালে সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানের আকুল কান্নাই মৃত্যুর জগত থেকে ফিরিয়ে আনল এক মৃত মাকে।

জুলিয়া মার্থার শরীরে গর্ভাবস্থাতেই কিছু জটিলতা দেখা গিয়েছিল। ডাক্তাররা তখনই আশঙ্কা করেছিলেন, সন্তান প্রসবের সময়ে হয় মা, নয় তাঁর সন্তানের মধ্যে যে কোনও একজনের প্রাণসংশয় হতে পারে।

যথাসময়ে সুস্থ সন্তান প্রসব করেন জুলিয়া। কিন্তু সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যায় তাঁর। ডাক্তাররা বুঝে যান, যা আশঙ্কা করেছিলেন, ঠিক সেটাই ঘটেছে। প্রসবের সময়ে মারা গিয়েছেন জুলিয়া।

জন্মের পর থেকেই ক্রমাগত কেঁদে চলেছিল জুলিয়ার সদ্যোজাতটি। ডাক্তার আর নার্সরা নানা ভাবে বাচ্চাটিকে চুপ করানোর চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু কোনও লাভ হয় না। তখন ডাক্তার-নার্সদের মনে হয়, বেঁচে না থাকুন, তবু মায়ের শরীরের কাছে নিয়ে গেলে হয়তো মায়ের গায়ের গন্ধে শিশুটি একটু আশ্বস্ত হবে!

- বিজ্ঞাপন -

অগত্যা শিশুটিকে নার্সেরা নিয়ে যান তার মায়ের মৃতদেহের কাছে। মায়ের পাশে যাওয়া মাত্রই শিশুটি তার নিজের ছোট্ট দুটি হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে চার ঘণ্টা আগে মারা যাওয়া মায়ের মুখ। আর তার পরেই ঘটে যায় এক অবিশ্বাস্য ঘটনা।

সামনে উপস্থিত ডাক্তার এবং নার্সেরা পরম বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেন, শিশুটির আকুল কান্নার শব্দে ধীরে ধীরে হৃদস্পন্দন ফিরে আসছে জুলিয়ার দেহে। একটু পরে চোখ খোলেন তিনি। পরম মমতায় হাত দিয়ে বুকের কাছে চেপে ধরেন বাচ্চাটিকে। শিশুটিরও ততক্ষণে একদম চুপ।

Screenshot 20210531 214447 2 সন্তানের কান্না শুনে মৃত্যুর চার ঘণ্টা পরেও বেঁচে উঠলেন মা
সন্তানের কান্না শুনে মৃত্যুর চার ঘণ্টা পরেও বেঁচে উঠলেন মা 35

আর‌ কয়েক মিনিট পরেই, চার ঘণ্টা পার হলেই যাঁর নামে ডেথ সার্টিফিকেট লেখার কথা, তিনি কী ভাবে ফিরে পেলেন জীবন?

এ ব্যাপারে হাসপাতালের গাইনোকলজি বিভাগের প্রধান ডাক্তার পিটার অরল্যান্ডো জানান, প্রসবকালীন শক এবং যন্ত্রণা জুলিয়ার হৃদস্পন্দন কয়েক ঘণ্টার জন্য স্তব্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তাঁর মস্তিস্কের মৃত্যু হয়নি। সন্তানের কান্না সেই মস্তিস্ককেই প্রচন্ড ভাবে নাড়া দিয়েছে। ফলে আচমকা আঘাতে সচল হয়ে গিয়েছে মহিলার হৃদপিণ্ড।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তার-নার্সেরা ওই সময় যদি বাচ্চাটিকে তার মায়ের কাছে নিয়ে না যেতেন, তা হলে আমরা তাঁকে মৃত বলে যে সাদা চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলাম, সেটাই বহাল রাখতে হত। কারণ, তাঁর হৃদপিণ্ড এ ভাবে আর কয়েক মুহূর্ত বন্ধ থাকলেই তাঁকে আর কিছুতেই বাঁচিয়ে তোলা যেত না। না, বাচ্চার কান্নাতেও না।

- বিজ্ঞাপন -

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!