ভাসমান নদীর সাথে সংগ্রাম ও সংকটে জীবন যাদের বহমান তারা হলো রামপাল ও মোংলা উপজেলার বাসিন্দা। ঝড় আসে, আসে জলোচ্ছ্বাস তবু কাঁটে জীবন তাদের স্বপ্নবোনা রোদে। সিডর, আইলা, বুলবুল, ফণী ও ইয়াসসহ অতীতের বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় থেকে আমাদের নিরলসভাবে রক্ষা করেছন ম্যানগ্রোভ এই সুন্দরবন। বেঁচে থাকুক সুন্দরবন বেড়ে উঠুক আমাদের নিম্নাঞ্চলের লবণ জলের সাহস।
বাগেরহাটের রামপালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি, পুকুর, চিংড়ি ঘের, নলকুপ, হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, হাস-মুরগী ও মানসম্মত পায়খানা ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরসূত্রে জানা যায় ঘুর্ণীঝড় ইয়াসে মোট দশটি ইউনিয়নে প্রায় ৬ কোটি ৮৯ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩ শত ৪ টাকার ক্ষতি হয়েছে। রামপালের অধিকংশ মানুষই মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারনে মৎস্য সেক্টরেই সবচেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশী হয়েছে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ জানান, উপজেলার মোট দশটি ইউনিয়নে ২হাজার ৭ শত ৮১টি মৎস্য ঘের ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে। ১৪৪৪.৮৭ হেক্টর আয়তনের মৎস্য ঘেরগুলোর ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫ কোটি ২৪ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা। এছাড়া অন্যান্য দপ্তরের হিসাব মতে বিভিন্ন ক্ষতির সংখ্যা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মতিউর রহমান জানান, ৪ হাজার ৮ শত ৪৫ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর ০২ টি, আংশিক ক্ষতি ৩৩ টি, মৃত হাঁস ০৮ টি, মুরগী ৩৩ টি, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় ০২ টি, গভীর নলকুপ আংশিক ১৫ টি, অগভীর নলকুপ আংশিক ০৮ টি, মানসম্মত পায়খানা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৫০০ টি এবং আংশিক ০১ টি হাসপাতাল। উপজেলা প্রকৌশলী, গোলজার হোসেন জানান, ঘুর্ণীঝড় ইয়াসে জলোচ্ছ্বাস বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল বাতাসে উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ০৪ টি রাস্তার দুপাশ ভেঙে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বাঁশতলী ইউনিয়নের গিলাতলা শিকি রোডটি ৬ কিলোমিটার রাস্তাটি ০২ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতি হয়েছে। হুড়কা ইউনিয়নের নলবুনিয়া থেকে বাবুরবাড়ি পর্যন্ত ২২৫০ মিটার রাস্তাটি ১২ শ মিটার আংশিক ক্ষতি, ভাগা থেকে কাপাশডাঙ্গা রাস্তাটি ১৩ কিলোমিটার রাস্তাটি ০২ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতি এবং বাইনতলার সকুরহাট থেকে আলীপুর পর্যন্ত ০৩ কিলোমিটার রাস্তাটি ০১ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন বলেন, দুর্যোগের উপরতো আমাদের কোনো হাত নেই তবু প্রতিটি মানুষকেই আমরা সচেতন করছি। এছাড়া দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি যেনো কমানো যায়, মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আশা যায় এই বিষয়ে আমরা সচেনত রয়েছি। পাশাপাশি দুর্যোগের পরবর্তীতে সরকারি সহায়তা প্রত্যেকেই পান এটা আমি নিশ্চিত করবো এবং এজন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী যে পরিমান ত্রাণ আসবে আমরা সেগুলোকে দুর্যোগ কবলি মানুষদের বণ্টন নিশ্চিত করবো। উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।