পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপকূলের ঘূর্নিঝড় ’ইয়াস’ ক্ষতিগ্রস্ত চালিতাবুনিয়া, ছোট বাইশদিয়া, বড় বাইশদিয়া, গাইয়াপাড়া, কোড়ালিয়া, চর আন্ডা, দক্ষিন চরমোন্তাজ এলাকার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান এমপি।
শনিবার দিনভর হাঁটু পানি পেরিয়ে তিঁনি বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দু:খ, দুর্দশার চিত্র প্রত্যক্ষ করেন।
এসময় দুর্যোগ কবলিত মানুষকে তিঁনি আশ্বস্ত করেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মান ও সংস্কার করা হচ্ছে।
এমপি মহিববুর রহমান বলেন, ’বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের এখন একটাই দাবী,টেকসই স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই।আপনাদের এ দাবীর সাথে আমিও আছি। রাঙ্গাবালীর বানভাসি মানুষকে বন্যা, ঝড়, জ্বলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত ’ইয়াস’ ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মান ও সংস্কার করা হচ্ছে।’
এসময় এমপি’র সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাউবো কলাপাড়া অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শওকত ইকবাল মেহেরাজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন,সম্পাদক সাইদুজ্জামান মামুন, কলাপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ ফাতেমা আক্তার রেখা, স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি জোবায়ের হোসেন প্রমূখ।
ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন শেষে বানভাসী মানুষের মাঝে এমপি মহিব ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ত্রান সামগ্রী বিতরন করেন।
এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’র প্রধান প্রকৌশলী এমডি নুরুল ইসলাম সরকার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: মজিবুর রহমান সহ পাউবো’র উচ্চদস্থ কর্মকর্তারা রাঙ্গাবালীর ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
পাউবো কলাপাড়া অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শওকত ইকবাল মেহেরাজ জানান, ’ঘূর্নিঝড় ইয়াস’র প্রভাবে রাঙ্গাবালীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টের প্রায় ৬-৭ কি.মি. বেড়িবাঁধ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া সিডর, আইলা ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এবং অনেক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ নেই। আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ নির্মান ও সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।’
প্রসংগত, ঘূর্নিঝড় ’ইয়াস’ তান্ডবে জেলায় ৪৮৪ টি কাঁচা-পাকা ঘর সম্পূর্ন বিধ্বস্ত, ৪২০৯ টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭ হাজার মাছের পুকুর ও ১৬০০ চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে জেলায় মৎস্য খাতে ক্ষতি হয় ৫৫ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। এছাড়া সড়ক যোগাযোগ ও কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
’ইয়াস’র প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারে ৪৫ গ্রামের প্রায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। এখনও উপকূলের অনেক মানুষ জোয়ারে পানিতে ডুবছে ও ভাটায় ভাসছে।