দেহ ব্যবসায় বাধ্য করতেই তরুণীদের ভারতে পাচারভাইরাল ভিডিওর ঘটনায় এদের ছবি প্রকাশ করে আসাম পুলিশ। ভারতে এক বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনা তদন্তে নেমে আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ভারতে এ চক্রটির মূল আস্তানা ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়। মূলত দেহ ব্যবসায় বাধ্য করতেই বিভিন্ন বয়সী তরুণীদের ভারতে পাচার করা হয়। তারা সেখানকার স্থানীয় কিছু হোটেলের সাথে চুক্তিতে টাকার বিনিময়ে নারী সরবরাহ করে।
শনিবার (২৯ মে) ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘পাচার হওয়া তরুণীদের দেহ ব্যবসায় বাধ্য করতে তাদের নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বিবস্ত্র করে ছবি-ভিডিও করা হয় কিংবা নির্যাতন করা হয়। তাদের কথামতো অনৈতিক কাজ করতে রাজি না হলে সেসব ছবি-ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তাদের হাতে রাখতে এবং বাধ্যতামূলকভাবে অনৈতিক কাজ করতে এটা ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কৌশল।’
ডিসি শহিদুল্লাহ বলেন, ‘ভিডিও ভাইরালের পর ভারতেও বিষয়টি আলোচিত হয়। পরে ভারতীয় পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে। ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধারসহ মূল অভিযুক্ত টিকটক হৃদয় এবং আরও চারজনকে গ্রেফতারের তথ্য পাওয়া গেছে। যারা প্রত্যেকেই অবৈধভাবে ভারতে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের কাছে ভিসা-পাসপোর্ট কিছুই ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকটকের একটি গ্রুপের অ্যাডমিনের তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষ দিকে ঢাকার পাশের একটি জেলায় পুলপার্টির আয়োজন করা হয়। ওই পার্টিতে প্রায় ৭০০-৮০০ তরুণ-তরুণী অংশ নেন। এই গ্রুপ থেকেই নারীদের টার্গেট করে বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভনে পাচার করা হয়।’
ভারতের ওই তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে এ চক্রের মাধ্যমে আরও অনেক তরুণী পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে। এর সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পাচার হওয়া তরুণীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এমন আরও গ্রুপ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, ভারতে বাংলাদেশি ওই তরুণীকে যৌন নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ মে) হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা করেন মেয়ের বাবা। প্রায় এক বছর ধরে নিখোঁজ থাকা মেয়েকে ভিডিও দেখে শনাক্ত করে মামলা করেন তিনি।
এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ জানায়, সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের এক তরুণীকে ভারতের কেরালা রাজ্যে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ঢাকা হাতিরঝিলের রিফাদুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামে এক যুবকে শনাক্ত করে পুলিশ।