বরিশাল শহরতলীর সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৮ ও ৯ ওয়ার্ডের সম্পূর্ণ এবং ৭ নং ওয়ার্ডের কিছু অংশ জুড়ে লামচরী।
নদী বেষ্টিত এলাকার এই লামচরীবাসীর দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। নদী ভাঙ্গল আর ভাঙা সড়কের দুর্ভোগ তাদের নিত্যসঙ্গী। আর বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানি এ দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েকগুন। বিপন্ন হয়ে যায় লামচরীবাসীর জীবন ও জীবিকা।
জনপ্রতিনিধি পাল্টে কিন্তু পাল্টে না লামচরীবাসীর ভাগ্য। বাধ্য হয়ে এলাকা ত্যাগ করছেন অনেকে বসিন্দা।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় ঘূর্ণিঝড় ছাড়াও বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে যায় রাস্তা-ঘাট ঘর বাড়ি।
আর ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছাস হলে প্লাবিত হয় স্কুল- মাদ্রাসা, মসজিদ-মন্দিরসহ সহ বিভিন্ন স্থাপনাও। এক বর্ষা মৌসুমের ক্ষতের সাথে যোগ হয় আরেক বর্ষা মৌসুমের ক্ষত।
গত বছরের আম্ফানের ক্ষতের সাথে যোগ হয় এবারের ইয়াস এর ক্ষত। কয়েকদিন যাবৎ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ সাথে পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় ফসলী জমি,মাছের ঘের, বাজারসহ প্রায় সব ঘর-বাড়ি।পানিবন্ধী হয়ে পরে লামচরীর অধিকাংশ পরিবার। সড়ক গুলো কীর্তনখোলা আর আড়িয়াল খাঁ নদীর পানিতে একাকার হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। একাধিক যায়গা থেকে সড়ক ভেঙ্গে খালে পরিণত হয় । যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পরে কয়েক হাজার মানুষ। অনেক যায়গায় সড়কের উপর সাঁকো তৈরি করে পারাপার হতে হচ্ছে। আবার অনেক যায়গায় সাকোঁ দেয়ার মত অবস্থাও নাই।সেসব যায়গায় সাঁতার কেটে বা নৌকায় পার হয়ে গন্তব্যে বা বাড়ি যেতে হয় ।
দক্ষিন লামচরীর বাসিন্দা এনামুল বলেন , লামচরীবাসী এতিম। আমাদের কান্না কেউ শুনেও না দেখেও না । আমাদের ঘর-বাড়িসব তলিয়ে গেছে কেউ খোঁজ খবর নিল না।
এদিকে বরিশাল শহরে থেকে লামচরী যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির তালতলী থেকে লামচরী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন রয়েছে অন্তত ৩ যায়গায়।
কয়েক বছর আগে এই মূল সড়ক বিলীন হয়েছে কীর্তনখোলা নদীগর্ভে পরে লামচরীতে থাকা দুইটি ইটভাটার মালিকদের অর্থায়নে ও এলাকাবাসীর সহায়তায় পাশ দিয়ে আরেকটি সড়ক তৈরি করা হয়। সামান্য বৃষ্টিতে বা জোয়ারের পানিতে সেই সড়কটিও পানিতে ডুবে যায়।বাধ্য হয়ে কখনো ট্রলার দিয়ে পারাপার হতে হয়।ভোগান্তিতে পরে এই সড়ক প্রতিদিন যাতায়াত করা প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা কলেজ শিক্ষার্থী মিজান বলেন, আমরা সাহায্য চাই না। আমাদের একমাত্র চাওয়া এই সড়কটির সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী হোক।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান জানান , লামচরীতে পানিবন্ধী মানুষদের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শুকনো খাবার সহায়তা পৌঁছানো হয়েছে। আর তালতলী থেকে লামচরী সড়কের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি রাস্তার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাগুলো মেরামত করা হবে বলে জানান তিনি।