ঘূর্নিঝড় “ইয়াস” ও পূর্ণিমার কারণে নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নদী তীরের ১২টি পয়েন্টে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে বেশকিছু গ্রাম।
অপরদিকে জোয়ারের পানিতে প্রায় ১ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রশাসন।
বেড়িয়ে গেছে বিভিন্ন মৎস্য খামারের ৬৪ কোটি টাকার মাছ।
তবে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার কারনে কৃষকরা উদ্বিগ্ন ছিলো, তাই ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে বৃষ্টিকে আশির্বাদ হিসেবে দেখছেন কৃষকরা।
ঘূর্নিঝড় “ইয়াস” এর প্রভাব কেটে গেলেও পূর্ণিমার কারনে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বৃহষ্পতিবার বিকেলে ও শুক্রবার ভোররাতের জোয়ারে বরিশাল নগরের নিম্নাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী বহু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিনাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্নিঝড় ‘ইয়াস’ এবং পূর্নিমার কারনে সাগরে পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভাগের বরগুনা সদরে বেড়ী বাঁধের ৪টি পয়েন্ট, বামনায় ২টি পয়েন্ট, বেতাগীতে ১টি পয়েন্ট, পাথরঘাটায় ১টি পয়েন্ট ও আমতলীতে ১টি পয়েন্ট, পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নিজামপুরে ১টি পয়েন্ট ও ধুলাসারে ১টি পয়েন্ট এবং ভোলার মনপুরায় ১টি পয়েন্ট সহ মোট ১২টি পয়েন্টে প্রাথমিকভাবে এক থেকে দেড় কিলোমিটার বেড়ী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, ২৭ মে বিকেল ৬ টার সবশেষ হিসাব অনুযায়ী বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫ সেন্টিমিটার, আবুপুরের নয়াভাঙ্গুলী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩৮ সেন্টিমিটার, টঙ্গীবাড়ির তেতুলিয়ার পানি ডেঞ্জার লেভেলের ১২৬ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২২ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেতুলিয়া নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এরআগে বিকেল ৩ টার দিকে বরিশালের হিজলার ধর্মগঞ্জ, পিরোজপুরের স্বরুপকাঠী, বরগুনার বামনার বিষখালী, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আব্দুর রাজ্জাক জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভাগে প্রায় ১ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তহয়েছে। পানির চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা-পাকা সড়কও।
এছাড়াও কিছু গাছপালা, পানের বরজ ও শাক সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর পূর্নাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ‘ইয়াস’ এর কারনে বিভাগের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পুকুর ও ঘের ডুবে ৬৪ কোটি টাকার মাছ বেড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আনিছুর রহমান জানান, শুধুমাত্র পটুয়াখালী জেলায় ৫৫ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
বরিশাল বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর অতিরিক্ত পরিচালক তাওফিকুল আলম জানান,দীর্ঘ খরার পরে বৃষটি ও পানির কারনে আউশ ধান চাষে কৃষকরা উপকৃত হবেন।