হোটেলের ঘরগুলো যেমন সোনা দিয়ে তৈরি, তেমনই বাথরুম থেকে সুইমিংপুল— সবই সোনার পাত দিয়ে মোড়া। চা থেকে শুরু করে খাবার-দাবার, সব কিছু সোনার পাত্রেই পরিবেশন করা হবে। তার থেকেও বড় কথা হল, হোটেলের চেয়ার-টেবিল, খাট, আলমারি থেকে শুরু করে সমস্ত আসবাবপত্রও সোনার তৈরি।
এমনকী, হোটেলের টয়লেট থেকে শুরু করে লবি, ইনফিনিটি পুল, বাথরুমের শাওয়ারের মাথাটিও সোনা দিয়ে বানানো। হোটেলে থাকা কাস্টমারের কোনও গেস্ট দেখা করতে আসামাত্রই তাঁকেও সোনার কাপ-প্লেটে করেই কফি দেওয়া হবে।
হোটেলটির ভেতর এবং বাইরে যে পাঁচ হাজার বর্গমিটার জুড়ে সেরামিক টাইলস বসানো হয়েছে, সেই টাইলসগুলোও সম্পূর্ণ সোনা দিয়েই তৈরি। সোনায় মোড়া এই হোটেলটি মোট পঁচিশ তলার। আর ইমিউনিটি পুলটি রয়েছে একেবারে রুফটপে।
না, এটা শুধু পাঁচতারা হোটেলই নয়, এটা তার থেকেও বেশি কিছু। অর্থাৎ, এটাকে ছয় তারকাও বলা যায়। চব্বিশ ক্যারেটের চকচকে সোনার এই হোটেলটি তৈরি করা হয়েছে ভিয়েতনামের রাজধানী হানোইতে। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বলতে হয়, হোটেলটি হানোইয়ের বা দিন জেলার গিয়াং ভো লেকের এক্কেবারে ধারেই তৈরি করা হয়েছে।
হোটেলটির নাম— ডলস হানোই গোল্ডেন লেক। এই হোটেলটিকেই বিশ্বের প্রথম সোনার হোটেল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।
২০০৯ সালে হোটেলটির কাজ শুরু হয়। বিশ্বজুড়ে করোনার থাবায় সমস্ত কাজ আটকে গেলেও, আশা করা যাচ্ছে চলতি বছরের শেষের দিকেই জনসাধারণের জন্য এই হোটেলটি খুলে দেওয়া যাবে। তবে না, এই একটি সোনার হোটেল নির্মাণ করেই তারা ক্ষান্ত হচ্ছেন না। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যেই এই রকম আরও ছ’-ছ’টি সোনার হোটেল বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তারা।
এটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার সমান। এই হোটেলটি নির্মাণ করছে ভিয়েতনামের হোয়া বিন গ্রুপ। হোটেল-সহ আরও অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি এই গ্রুপের এমন একটি কারখানা রয়েছে, যেখানে তারা খুব সস্তায় নানান ধরনের সোনার জিনিসপত্র বানিয়ে দেয়।
হোটেলটির ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব থাকবে আমেরিকান সংস্থা উইনধাম হোটেল গ্রুপ।
না, এই হোটেলে থাকার ভাড়া কিন্তু সোনার হোটেল হিসেবে খুব একটা বেশি নয়। এই হোটেলের ঘর ভাড়া শুরু হচ্ছে দৈনিক ২৫০ মার্কিন ডলার থেকে। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় কুড়ি হাজার টাকা। আর অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া? না, সেটাও এমন আহামরি কিছু নয়। মাত্র ৬৫০০ মার্কিন ডলার। মানে ওই পাঁচ লাখ টাকার কাছাকাছি। একটা সোনার হোটেলে রাত কাটানোর জন্য এটুকু খরচ তো করাই যায়, নাকি?