যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
2 মিনিটে পড়ুন
‘সীতার পাতাল প্রবেশ’- এই গ্রাম আত্মনির্ভরতার পাঠ শেখায়। ছবি: আনন্দবাজার

মধ্যপ্রদেশের ছান্দিওয়াড়া জেলার সতপুড়া পার্বত্য এলাকাতেই রয়েছে আদিবাসীদের গ্রাম— পাতালকোট। ছান্দিওয়াড়ার সদর শহর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে।

ওই এলাকার গ্রামগুলোতে মূলত ভারিয়া, ভূমিয়া-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা বাস করেন। পাহাড়ি জঙ্গলে ঘেরা ওই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই দেখার মতো।

vuriya যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
এঁরা মূলত ভারিয়া ভূমিয়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। ছবি: আনন্দবাজার

দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকায় আদিবাসীরা থাকলেও, তাঁদের সম্বন্ধে খুব একটা কিছু জানা যায়নি এত দিন। এমনকী কয়েক বছর আগেও ভারত কেন, মধ্যপ্রদেশের ম্যাপেও ছিল না ওই এলাকার হদিশ।

1606311809 5fbe5f813bd07 5 যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
ছবি: আনন্দবাজার

এখনও শুধুমাত্র পাহাড়ের উঁচু এলাকা থেকে বোঝা যায় ওই পাতালকোট উপত্যকাটির অস্তিত্ব। গ্রামগুলো সমতল থেকে প্রায় ১৭ ফুট নীচে।

- বিজ্ঞাপন -
bisbas যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
তাঁদের বিশ্বাস, সীতা এই এলাকা দিয়েই পাতালে প্রবেশ করেছিলেন। ছবি: আনন্দবাজার

ওই এলাকাটিকে ‘পাতালে পৌঁছনোর সিঁড়ি’ বলেও দাবি করেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। আদিবাসীদের বিশ্বাস, সীতা ওই এলাকা দিয়েই পাতালে প্রবেশ করেছিলেন।

addibasI gram যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
এখানে বসবাসরত সকলে কর্মঠ আত্মনির্ভরশীল। ছবি: আনন্দবাজার

পাতালকোট এলাকায় রয়েছে কম-বেশি ১২-১৩টি গ্রাম। সেই গ্রামের লোকজনদের জীবনযাত্রা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নয়।

মধু যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
তাঁরা জঙ্গল এলাকা থেকেও বিভিন্ন ফল, মধু সংগ্রহ করেন। ছবি: আনন্দবাজার

ওই এলাকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন যা লাগে, তার জন্য তাঁদের বাজার-হাটে যাওয়ার দরকার হয় না। চাল, গম, আলু, পটল থেকে শাক-সবজি— সব, সব কিছু নিজেরাই চাষ করেন। জঙ্গল থেকেই সংগ্রহ করেন বিভিন্ন ফল-মূল, মধু।

shak sobji যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
তাঁরা নিজেরাই খাদ্যশস্য ও শাক সবজি চাষ করেন। ছবি: আনন্দবাজার

তাঁদের অসুখ-বিসুখ করলে, সেই অসুখ উপশমের জন্য ওষুধের প্রয়োজনও মিটিয়ে দেয় ওই জঙ্গলই। জঙ্গলে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ঔষধি গাছ। সেই গাছ থেকেই তাঁরা তৈরি করে নেন বিভিন্ন ধরনের ওষুধ।

ওই কাজ করার জন্য অবশ্য বেশ কিছু লোকও রয়েছেন ওই আদিবাসী গ্রামে। তাঁরাই বংশ পরম্পরায় করে আসছেন ওষুধ বানানোর কাজ।

- বিজ্ঞাপন -
ou 1 যে গ্রামের লোকেদের নুন ছাড়া কিনতে হয় না কিছুই
জঙ্গল থেকে এরা নিজেরা যোগাড় করে নেন প্রয়োজনীয় ঔষধি গাছ গাছড়া। ছবি: আনন্দবাজার

তাই জীবন ধারণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনী খাদ্যদ্রব্যের ব্যাপারে কারওরই মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না তাঁদের।

শুধু একটি জিনিসই তাঁদের বাইরে থেকে জোগাড় করে আনতে হয়। আর সেটা হল— লবণ, মানে নুন। একমাত্র এই নুনের জন্যই পাতালকোট এলাকার ওই গ্রামের লোকগুলোকে গ্রামের বাইরে বেরোতে হয়। না হলে ওই গ্রামটাকেই তাঁরা বানিয়ে ফেলতে পারতেন তাঁদের একটা নিজস্ব পৃথিবী।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!