বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২২তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে মঙ্গলবার বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য পরিষদ ও উদার আকাশ পত্রিকার উদ্যোগে একটি মনোজ্ঞ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হল। দুই বাংলার বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, নজরুল গবেষক এবং নজরুল অনুরাগী ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল বেশ কয়েকটি শিশুরও। নজরুলের জীবন ও সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা, নজরুলের কবিতা আবৃত্তি, নজরুলের গান পরিবেশন, কবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বরচিত কবিতাপাঠ প্রভৃতির মাধ্যমে ঘণ্টাতিনেকের ওই অনুষ্ঠান বিশেষ মাত্রা পায়। প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মোশারফ হোসেন, নজরুল গবেষক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, ড. নুরুল ইসলাম, উদার আকাশ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, প্রান্ধিক দীপক সাহা প্রমুখ অনেকেই এতে অংশ নেন।
কাজী নজরুলই যে সর্বপ্রথম তাঁর ধূমকেতু পত্রিকার মাধ্যমে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার আওয়াজ তুলেছিলেন সেকথা মনে করিয়ে দেন ফারুক আহমেদ। মোশারফ হোসেনের মুখে নজরুলের জীবনের বিভিন্ন সময়ের এমন বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা শোনা গেল যেগুলি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগেরই অজানা ছিল বলে তাঁরা অভিমত দেন।
নজরুলের সাহিত্য ও সঙ্গীত সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে কতটা স্বকীয় অবস্থান করে নিয়েছিল তার উল্লেখ করেন ড. নুরুল ইসলাম ও ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম।সাম্যের কবি, ভালোবাসার কবি, স্বাধীনতা সংগ্রামের কবি নজরুলকে আরও নানান আঙ্গিকে উপস্থাপন করেন কবি ও প্রবন্ধিক সুব্রতা ঘোষ রায়, আরফিনা, লিটন রাকিব, আসিফ আকরাম প্রমুখ।
কবিতা আবৃত্তি করে শোনান ড. পিনাকী চট্টোপাধ্যায়। নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী অধিকারী, আরফিনা,শংকর নারায়ন সিনহা, মেরিনা বানু, মীর মনসুর আলি, ফজলুর রহমান প্রমুখ। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন জিন্নাতুল ফেরদৌস সহ কয়েকজন। কবিতা আবৃত্তি করে শোনায় শিশু শিল্পী রায়সা নূর ও প্রতিকৃতি চট্টোপাধ্যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ছিলেন বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পরিষদের পক্ষে শেখ আসিফ আকরাম ও লিটন রাকিব।
অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তারা ঘোষণা করেন, নজরুলের জীবন ও সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁরা শীঘ্রই একটি সংকলনগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেবেন। এছাড়াও আগামী আগস্ট মাসে বিদ্রোহী কবির প্রয়াণ দিবসে আরও বড় আকারের একটি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। দুই বাংলার নজরুল অনুরাগী ও নজরুল বিশেষজ্ঞদের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে।