শরীয়তপুরের ডামুড্যায় ঘরের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা ৮৩ বছরের একজন বৃদ্ধ ও অসুস্থ নারীকে ঘরে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ডামুড্যা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ঐ বৃদ্ধ নারী।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন শিধলকুড়া ইউনিয়নের আরমান বেপারীর ছেলে শামিম বেপারী (২৭) এবং একই এলাকার শহীদ মাদবরের ছেলে হাসান মাদবর (২৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার গভীরর রাতে ওই বৃদ্ধা নারীর ঘর থেকে চিৎকার শুনে বাড়ী সংলগ্ন প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। ঘরে ঢোকার সদর দরজা বন্ধ থাকায় প্রতিবেশীরা চেষ্টা করেও ঐ বৃদ্ধার ঘরে ঢুকতে পারেন নি। এই ফাঁকে শামিম ও হাসান ঘরের পিছনের দরজা খুলে পালিয়ে যায়। ফলে তাদেরকে হাতেনাতে ধরা যায়নি।
ধর্ষণের শিকার ঐ বৃদ্ধা নারী আক্ষেপ করে বলেন, জীবনে বড় পাপ করেছি। না হলে আজ এই দিনটা দেখা লাগতো না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী মারা যাবার পর থেকেই ঘরে একাই থাকি। আমার ৩মেয়ে বিবাহিত এবং তারা শ্বশুর বাড়িতেই ঘরসংসার করছে। আমি অসুস্থ। প্রতিদিনের মত রাতে শুয়ে পড়ি। মাঝেমধ্যে রাতে শামিম এসে আমার ঘরে ঘুমাতো। কালও পুলিশ ওকে ধরতে আসছে বলায় আমি সরল মনে ঘরের দরজা খুলে দেই। তারা দুইজনে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে পাশের খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ে। আমিও ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ তারা আমার শরীরের ওপর আক্রমণ করে। আমার মুখ চেপে ধরে রাখায়, আমি চিৎকার করলেও শব্দ বের হয়নি। আমার মুখ থেকে তাদের হাত সরে যাওয়ায় জোরে চিৎকার করি। এরপর আমার চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে।
বৃদ্ধার প্রতিবেশী রিনা বেগম বলেন, রাতে প্রায় ৩টার দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে পাশের বাড়ির বৃদ্ধা নারীর চিৎকার শুনতে পাই। প্রথমেভেবেছিলাম অসুস্থতার কারণে বোধ হয় এমন করছে। এরপর উঠে গিয়ে তাকে সাহায্য করার জন্য গেলে তিনি বলে ওঠে, তোরা কে কোথায় আছত, আমারে বাঁচা, শামিম আর হাসান আমাকে মেরে ফেলতাছে। আমি দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখই দরজা বন্ধ। পরে ঐ বৃদ্ধা বলে, ওরা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আমি দৌড়ে পিছন গেলে দেখি দুই জন দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অন্ধকারে চিনতে পারিনি। ঘরে ঢুকে তাকে অজ্ঞান ও বিবস্ত্র অবস্থায় ঐ বৃদ্ধা নাড়ীকে খাটে পড়ে থাকতে দেখি।
এদিকে শামিমের দাদা সামসুল ইসলাম (৭৮) বলেন, আমার নাতি নেশা পানি করে একথা ঠিক, কিন্তু তার কোন নারী ঘটিত সমস্যা নেই। এলাকার মানুষ আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
ডামুড্যা থানা অফিসার্স ইন চার্জ (তদন্ত) প্রবিন চক্রবর্তী বলেন, ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর হাসপাতালে পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসার পর তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।