দেশে করোনা আক্রান্ত পরবর্তীতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস সংক্রমিত হয়ে ৩জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গত তিনদিন আগে তাদের মধ্যে একজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত অপরজন রোগী এখনও বারডেম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়াও শনাক্ত হওয়া আরেকজন রোগী অন্যত্র চলে গেছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন। তার নাম পরিচয় জানানো হয়নি।
বারডেম হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ভর্তি থাকা রোগীর অবস্থা শঙ্কাজনক নয়। তাকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ওষুধের দাম অনেক বেশি হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওষুধের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
তিনি জানান, গত তিন দিন আগে ৬৫ বছর বয়সী একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বারডেমে। এই রোগীর অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস এবং কিডনির সমস্যাও ছিল। তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছিলেন। চিকিৎসার সময় বোঝা যায়নি যে, তিনি মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুর পর বিষয়টি জানা গেছে।
সাতক্ষীরার নিবাসী ৫৫ বছর বয়সী আরেকজন রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন এবং সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। মাসখানেক পর আবার জ্বর দেখা দিলে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বারডেমে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন জানান, এই রোগী চার-পাঁচ বছর ধরে ডায়বেটিসে ভুগছেন। এরপর তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বর ও কাশি কমে না যাওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে যক্ষ্মার ওষুধও দিয়েছেন। এখন দেখা যাচ্ছে, তিনি মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত।
মিউকোরমাইকোসিস নতুন কোনো ছত্রাক নয়। এই ছত্রাক পরিবেশেই আছে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে জানিয়েছে অণুজীববিজ্ঞানী।
যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস থাকে তাদের ঝুঁকি বেশি। আবার স্টেরয়েড গ্রহণ করা কোনো কোনো ব্যক্তিও এতে আক্রান্ত হতে পারেন বলে জানান অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশ ভারতে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৮০০ জন এই ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছে।