হারানো কবিতা
শূন্যতা শৈল্পিক হলে উঠে আসে হারানো কবিতা ।
দুঃখের কনা কনা আগুনে দাউ দাউ ভিজে যায় মন।
আকাশে আবির রঙা গোধূলি সন্ন্যাস;
শেষ হাত বাড়িয়ে ডেকে নেয় অশেষ যেইদিকে।
তুমি হারিয়ে গেলে মনে হয়
মনখারাপের সমস্ত ছায়া বারান্দায় একা হয়ে আছে।
ফুটে আছে ভুল করা তোমার,
গুচ্ছ ফুলের গোপন ইশারা কোথাও!
এই এক – একটা জন্ম ,
সম্পন্ন হাওয়ার পরপরই
সম্পূর্ণ মৃত্যু রাখে চোখে।
চলে যাওয়ার আগে মানুষ
তার সমস্ত শরীরের ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে দিয়েও,
তবু রেখে যায় সুখ ।
অন্ধকারকে ঈশ্বর লিখি
তোমার ভালো কথাগুলির সরলতা
আরও কিছুটা মসৃণ করে তোলো।
আলো, নাকী অন্ধকারের ভাষা
এখনও ঠিক বোঝাই যায়না !দেখি
ঘরের হাওয়া খেতে খেতে
ধুলো গন্ধ বুকের ভার তোমার,
আমার চোখে এসে লাগে।
আমি স্পষ্ট খুশির আগুন হয়ে বেড়াই ।
উড়ে চলি আনন্দ ঠিকানায়।
সেদিন তোমার কবিতায়
ক্ষুধা বসেছিল দেখি চালা ঘরটির নীচে।
পায়ে পায়ে হেঁটে যাই ধুলো মেখে।
আদর ও সোনা চুম্বন ঠোঁটে নিই।
রোজ রাতে অন্ধকারকে ঈশ্বর লিখি।
জানি অতীত দিনের সুখ ভেসে উঠলেই
হালকা হয়ে আসে মন।
খবর
এই সেই খবর —
হতে গিয়ে নিজেকে হারালে।
কালের অনন্ত আড়ালে রেখে দিলে ছবি।
তুমি কী কাগজ হতে পারতে না, চাইলে?
যে কাগজে লিখে যাওয়া হাজারও কাজের
স্মৃতি বুকে নিয়ে বেঁচে থাকে প্রাণ?
আহা একটা কাগজ —তোমার শরীর হলে,
সংসারের যাবতীয় কর্তব্যের মতো হাল ধরে রেখে,
সুখ -দুঃখের হিসেব লিখে রাখা
খবরে খবরে প্রচারিত জীবন হয়ে উঠলে,
তোমাকে পৃথিবী বানাত মানুষ,
আর
মাথায় একটা গামছার বিঁড়া বেঁধে
ঝোড়ার উপর বসিয়ে রাখা মাটি – মায়ের মতো
তোমাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে আসত লোক ।
এখানে কোনও মানুষ নেই রাস্তায়
আপাতত কোনও মানুষ নেই রাস্তায় ।
পথচলতি ধুলো ,কেবল হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে চলে যাচ্ছে,
দিশাহীন কোনও অন্ধকারের দিকে।
শূন্যতা গ্রাস করে আছে সমস্ত ঘর ও বাহির ।
শোক ও দুঃখের ভারে, ভরা নদী,
গলিত স্বপ্নের মতো স্রোত হয়ে বয়ে যাচ্ছে দূর….
শ্মশান ক্ষেত্র রচনা করে বসে আছেন
আমাদের আলোর হৃদয় ।
এখানে কোনও পৃথিবী নেই—হ্যাঁ,
পৃথিবী নেই মানুষের!
সমাজের রাজা সাজা অবুঝ বিকেল,
কেবল, অনর্গল সন্ধ্যা বাতির আলো দেখিয়ে,
মিথ্যে স্থির লক্ষ্যে পৌঁছিয়ে দিচ্ছে পথিককে, এইখানে।
না, এখানে,
কোনও প্রকৃতপক্ষে মানুষ নেই রাস্তায় !
একটি আশ্চর্য ঘন্টার ধ্বনি
কম্প দিয়ে হাওয়া অন্ধকার ঘনাল।
আলো থেকে বেরিয়ে ছিটকে,
মনখারাপ নেমে এল দাওয়ায়।
ও কী ভীষণ কস্টের দিনলিপি,
আমার লাবণ্য দশকের গলি পেরিয়ে শূণ্যে মিশে গেল !
আমি কী শোকের আশঙ্কায় পূর্ণ
ছায়ামেঘ হয়ে আছি,
গলন চক্ষুর বৃষ্টি মাখিয়ে, এখনও?
নাকী সংসারের সমুদ্র গর্জন থেকে
অনেক দূরে আকাশে ভেসে যাচ্ছি ক্রমশ কোথাও ….
একটি আশ্চর্য ঘন্টার ধ্বনি
রাতের অগ্নি বলয় থেকে উঠে এসে,
চমৎকার নাড়া দিয়ে গেল, আমাকে যাওয়ার …
ভাগ্যলক্ষ্মী
থাকলে, ভাগ্যলক্ষ্মী বসুন্ধরার,
চমৎকার আলো খেলে যায়।
গড়গড়িয়ে চলে যায় জীবন ।
ধুলো ময়লার শ্লোকে কবিতা আর ম্লান থাকে না।
নতুন ভাবের অক্ষরে ঘষে মেজে তারা চকচকে হয়ে ওঠে,সুন্দর…..
আকাশ-সম্পূর্ণ হলে হৃদয় ,
মুক্ত বিহঙ্গের চোখ তখন ডানা লাগিয়ে স্বপ্ন ওড়ায়।
মধু সন্ধ্যার শান্ত আসনে , ঘরে, মা বসেন প্রদীপ জ্বালিয়ে।
সংসারে আরোগ্যর হাওয়া বয়ে যায় অদূর, সনাতন ….
ধুলো প্রকৃতির গ্রাম,
বুক ভরে শ্বাস নিয়ে এসে,
তোমার পাতা নাড়িয়ে যায় দক্ষিণ দিকের ,মৃদু মৃদু ….