বরিশাল বিভাগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলা ওপরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে বিভাগীয় দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং এ দুর্যোগকালীন সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। সেমাবার দুপুর ১ টায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় কমিশনার অফিস জানায় বরিশাল বিভাগে ৪৯১৫ টি স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। এসময় তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অসুবিধা না হয় সে লক্ষ্যে সকল ধরনের প্রস্তৃতি নিয়ে তৈরী থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভাগীয় প্রশাসন ছাড়াও প্রত্যেক জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম খুলেছে।
বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বাদল জানাল গত রবিবার সকল জেলার জেলা প্রশাসক ও ইউএনও দের সাথে মিটিং হয়েছে, আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং হয়েছে। আমরা কোথাও ফাক রাখতে চাচ্ছি না। বিশেষ করে কোভিডের সময়ে সাইক্লোন শেল্টারে ম্যানেজমেন্ট কি রকম হবে তা ইতোপূর্বেও আমরা দেখেছি, আমরা সকল ধরনের সুরক্ষা নিয়ে তৈরী থাকব। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতা মূলক।
বিভাগীয় অফিস সূত্র জানিয়েছে সাইক্লোন শেল্টারে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে পরিবার ভিত্তিক আলাদা আলাদা অবস্থান নিশ্চিত করা হবে। এখানে হাত ধোয়া সহ সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক ভাবে নিশ্চিত করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বিভিন্ন জেলা প্রশাসকরা তাদের সকল প্রস্তুতি তুলে ধরেন। যে সব দুর্গম এলাকা রয়েছে, বিশেষ করে উপকূলীয় ভোলার কিছু এলাকা, এসব এলাকায় ‘ইভাকুয়েশন’ কার্যক্রম যাতে জোরদার করা হয় সেদিকে নজর দেয়ার জন্য জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল আলম জানান, সাধারণত মানুষ চুরির ভয়ে নিজ বাড়ি এলাকা ছাড়তে চায় না, তাদেরকে প্রাথমিক ভাবে বুছিয়ে শুনিয়ে, না হলে জোর করে হলেও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।
ঘূনিঝড় প্রস্তুতিমূলক কাজে সিপিপি সকাল থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে মতবিনিময় করেছে, তাদেরকে সতর্ক করেছে।
সিপিপি বরিশাল বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, সাধারণত ৪ নাম্বার সংকেতের পর তাদের প্রচার প্রচারণা ও উদ্ধারমূলক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বরিশাল জেলায় সিপিপি এর লোকবলের স্বল্পতা রয়েছে।
এদিকে ভোলায় মাছধারা ট্রলার গুলি তীরে আসতে শুরু করলেও এখনও নদীর মোহনায় রয়েছে অনেক ট্রলার।
সিপিপি ভোলার উপরিচালক আবদুর রশিদ জানান সন্ধ্যা নাগাদ সকল ধরনের নৌযান গুলি তীরে চলে অসবে বলে আশা করছেন।
বরিশাল বিভাগে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতিতে সাইক্লোন প্রিপারডনেস পোগ্রাম (সিপিপি) এর ৩৩ হাজার ৪শ সিপিপি কর্মী থাকলেও বরিশাল জেলায় রয়েছে মাত্র ৭০ জন। এর ফলে ঝূর্ণিঝড় প্রস্কুতি মূলক প্রচার মূলক ও উদ্ধার কাজ ব্যাহত হবার সম্ভাবনা দেখাদিয়েছে।
সিপিপি বরিশাল ভিাগীয় কার্যালয় জানান মোট স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ভোলায় রয়েছে সবচেয়ে বেশী ১৩ হাজার ৬০০, ও বরিশাল জেলায় সবচেয়ে কম মাত্র ৭০ জন। এর ফলে নদীবহুল বিচ্ছিন্ন এলাকা, মেহেন্দীগঞ্জ ছাড়াও হিজলা ও মুলাদীতে কোন স্বেচ্ছাসেবক নেই।
এর ফলে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতিমূলক কাজ ব্যহত হতে পারে জানান ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি মূলক কর্মসূচী (সিপিপি) এর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন।
তিনি জানান এই অল্প সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক বরিশালের আশে পাশেই কাজ করে, বরিশালের দুর্গম এলাকা বিশেষ করে মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা ও মুলাদী উপজেলার জন্য তাদের পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো। সাইফুল ইসলাম বাদল জানান লোকবলের এই স্বল্পতা নিরসনে তিনি বরিশালের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন।