১১ দিন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ইজরায়েলি সময় আজ রাত ২:০০ টা থেকে হামাস আর ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হবে।
সন্ধ্যার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ঘোষণা করা হয়ে যে “নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সুপারিশক্রমে মিশরের মধ্যস্থতায় কোন শর্ত ব্যতিরেকে সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭:০০ টার পর ইজরায়েলের উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রীসভা সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধ বিরতির পক্ষে ভোট দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল-ফাতাহ আল-সিসিকে ফোন করেছিলেন।
ফ্রান্স এবং জাতিসঙ্ঘের সেক্রেটারি-জেনারেল যুদ্ধ বিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং যুদ্ধকারী দুই পক্ষকেই চাপ দিয়েছিল।
উভয় পক্ষই যুদ্ধ জয়ের দাবি করছে যদিও ফিলিস্তিনের গাজায় ব্যাপক জীবনহানী এবং লক্ষ লক্ষ ডলার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
গত ১১ দিনের যুদ্ধে গাজায় ৬৫ শিশু সহ ২৩২ জন নিহত হয়। অপরদিকে ইজরায়েলে ২ শিশু সহ ১২ জন নিহত হয়েছে এই যুদ্ধে।
এই যুদ্ধে গাজার ১৬,৮০০টি হাউজিং ইউনিট ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া রাস্তা আর বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সেখানে।
হামাস বলছে এই যুদ্ধে ৪ কোটি ডলার মূল্যের শিল্প-কারখানার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
ইজরায়েলের কারখানা মালিক সমিতি বলছে তাদের ১৬ কোটি ৬ লাখ ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে এই যুদ্ধে।
এটি ছিল ২০১৪ সালের পর ইজরায়েল আর ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বড় যুদ্ধ।
ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করছে যে তাঁরা ১২০ জন হামাস সদস্য আর ২৫ জন ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ সদস্যকে হত্যা করেছে।
ইজরায়েল আরও দাবি করছে যে তাঁরা আগামী কয়েক বছরের জন্য হামাসের যুদ্ধ করার সক্ষমতা দুর্বল করে দিতে পেরেছে।
ইজরায়েলর সামরিক বাহিনী বলছে হামাস এই যুদ্ধে ৪,৩০০টি রকেট ইজরায়েলের ভূমিতে নিক্ষেপ করেছে।
এদিকে ইজরায়েলের ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো যুদ্ধ বিরতির বিরোধিতা করেছে।
হামাসের সিনিয়র নেতা ওসামা হামদান দাবি করেছে যে তাঁরা পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এবং টেম্পল মাউনটের ব্যপারে ইজরায়েলের কাছ থেকে নিশ্চয়তা পেয়েছে। কিন্তু ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেনি গান্তস তা অস্বীকার করেছেন।
হামাস ইজরায়েলের সঙ্গে এই সংঘর্ষের সঙ্গে রমজানে টেম্পল মাউনটে নামাজ পড়া এবং শেখ জারাহ থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদের মামলাকে যুক্ত করেছে যা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক জেরেমি বাওয়েন মনে করেন যদি স্থিতাবস্থা নিজেদের পক্ষে পরিবর্তিত না হয় তাহলে আবার যুদ্ধ হবে।