বাঙালির শাকের ক্ষেত-
বহুল প্রচলিত প্রবাদ; ‘বাঙালির শাকের ক্ষেত দেখাতে নেই’ কেউ বলেন; ‘কাঙালকে শাকের ক্ষেত দেখাতে নেই’ যাই হোক কিন্তু কেন নেই? এখনো সঠিক কারণ অজানা! তবে মূল বিষয়টি খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত আছে!
যে যে প্রেমে মশগুল সে সেটা স্বাচ্ছন্দে পেলে অন্যদিকে মনোনিবেশের সুযোগ কোথায়, যদি তার চাহিদা হয় সীমিত। সেটা ইবাদত-বন্দেগী, ভার্চুয়াল জগত কিংবা প্রাকৃতিক জগত! যেটাই হোক না কেন..
ভার্চুয়াল জগতের কল্যাণে প্রযুক্তির যুগে; একটু আগেই স্বাধীন দেশে, একদিন আগেই প্রকাশ্যে ঈদের জামাত দেখার সুযোগ হয় মানুষের! তাদের বোঝাবার কেউ নেই! বিশ্বের অনেক দেশেই ধর্ম পালন করতে যেয়ে পদদলিত হয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রাণ যায়! সুবিধা বঞ্চিত মানুষের ত্রান বা জাকাত গ্রহণের সময় পদদলিত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ প্রায় পাওয়া যায়!
অধিকাংশ মানুষ নিজের চিন্তায় বিভর কিন্তু সামষ্টিক ভাবনায় নিশ্চুপ। তাই নিজের সুবিধার যখন যে গল্প প্রয়োজন তাই উপস্থাপন করে! তাই বোধ হয় বাঙালি; ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উত্তাল নদী পার হয়েছিলেন মায়ের সাথে দেখা করাতে, সেই গল্পকে সামনে আনো, অনেক ক্ষেত্রে মায়ের প্রতি বাস্তবে তেমনটি টান দেখা যায় না! তবে, মানুষ কি মনে করবে মায়ের সাথে ঈদ না কাটালে! অনেকেই সেই মেকি চক্ষু লজ্জার ভয়ে, বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে, স্বাস্থ্য বিধি না মেনে, নিরাপত্তা কথা না ভেবে, অনিশ্চয়তার দোলায় দোলে ফেরিতে, তাড়াহুড়োয় নামার পথে পদদলিত হয়ে মৃত্যু যা ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেখেও, বাস্তব জীবনে অবিশ্বাস্য মনে হয়! জেনে বুঝে অবলীলায় ভুল, সেটা ভুল নয়, অপরাধ! ভুল ক্ষমাযোগ্য কিন্তু অপরাধ শাস্তিযোগ্য-
এটা নিশ্চিত, এরকম সংক্রামক ব্যাধি মহামারীর অসময় হলে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মায়ের কাছে যেতন না। উনার মা বিচক্ষণ ছিলেন, তিনি সন্তানকে নিশ্চয় এটা প্রশ্রয় দিতেন না। প্রবীনদের অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা, যুবদের পরিশ্রম ও সুকর্ম এবং নবীনদের অধ্যবসায় ও জ্ঞানচর্চায় সংসারকে সুখি ও সমৃদ্ধ করে! পরিবারই, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিউক্লিয়াস-
তাইতো এনালগ যুগে সুখ নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ ছিল, তাই বোধহয় সুখ ধরা যেত কিন্তু ডিজিটাল যুগে সুখের সংজ্ঞা সীমাহীন, তাই বোধহয় অসীম চাহিদার অতৃপ্ততার অসুখে, সুখ পরাভূত..! তাই ব্যক্তি কেন্দ্রিক যে কোন কাজের পক্ষে অজুহাত, কারণ অন্য দুটি হাত অন্য কাজে ব্যস্ত, সুষ্ঠ চিন্তা করার সময় কোথায়? ভার্চুয়াল মাধ্যমে সবকিছুই ঝটপট পেতে চায় মানুষ ! তাই কারো চেতনায় যদি অচেতন থাকে তাদের সচেতন করবে কে?
এমনি ভাবেই হয়তো করোনাকালে সবাই অনিশ্চয়তার দোলায় দোল খায়। বিধায় হয়তো, এইডের সহকর্মীরা ফল-ফুলের রাজ্যের চিলেকোঠায় কিছু অংশে শাকসবজির আবাদ! অসময়ের যদি কাজে লাগে!
ভারতের মহামারীর যে তাণ্ডবলীলা চলছে! নদীতে ভাসমান লাশ! ভারতীয় ভ্যরাইটি, এই দেশেসহ অনেক দেশে প্রবেশ করেছে। অতীত ইতিহাস জ্বলন্ত সাক্ষ্য দেয়; মহামারী দুর্ভিক্ষকে আমন্ত্রণ করে। সত্যই যদি মানুষের দুয়ারে চরম দুঃসময়ে দুর্ভিক্ষ কড়া নাড়ে, তখন হয়তো প্রকৃতিপ্রেমীরা শাকসবজি দিয়ে কাটিয়ে দিতে পারবে, অনেকটা দিন স্বচ্ছন্দে। এই ধরনের চেষ্টা, অনেকেই করতে পারি। সেই কারণে কৃষিনির্ভর দেশ হিসাবে বাঙালী গর্বিত- *শাকের ক্ষেত দেখানোর বাস্তব ফলাফল কি হয় নিশ্চয়, একদিন করিব বর্ণন….