গাছটির নাম কেউ জানে না, তাই গাছটিকে অচিন গাছ বলেই জানে এলাকাবাসী। নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৭ নং লালোর ইউনিয়নের বড় বারুইহাটি গ্রামের শাখা আত্রাই নদীর কুলে ইমাম বাজার।
সেই ইমাম বাজারে প্রকাণ্ড একটি মাঠের এক প্রান্তে অবস্থিত এই বৃক্ষটি। গাছটির বয়স কতো তা নির্ণয় করতে পারছেনা এলাকার বয়স্ক মানুষেরাও। বট গাছের মতো প্যাচানো কান্ড, বিশাল আকৃতির গাছটি অচিন গাছ নামে অবহিত।
মাঝারি মাপের লম্বাটে মসৃন শক্ত পাতা এর। ফল ডুমুরের মতো, ভিতরে কেশর যুক্ত, ছোট ডুমুরাকৃতি সাদাটে এই ফলটি হালকা টক স্বাদের, মৌসুমে প্রচুর হলেও বছর জুড়েই গাছে ফল হয়।
কথিত আছে, জনৈক এক সওদাগর নদী দিয়ে যাওয়ার সময় নোঙ্গর করেছিলেন এই কূলে। তার কাছেই ছিল বৃক্ষের চারাগাছ, তিনি এখানে রোপণ করেছিলেন গাছটি। এলাকাবাসীরা আরো জানায়, ইমাম নামে একজন ব্যক্তি ছিল যার নামে এখানে একটি মাজার আছে সেই মাজারের নামে প্রায় একশত বিঘা সম্পত্তি বর্তমানে আছে।
মাজারের কোন অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়া গেলেও গ্রামবাসীদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, এই ইমামের নামে প্রচলিত আছে বিভিন্ন অলৌকিক কথা কাহিনী। অদৃশ্য এই ইমামকে নাকি অনেকেই দেখেছেন।
কথিত আছে, এই বৃক্ষটি তারই নিয়ন্ত্রণে, সেই কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এখানে আসে। এই গাছের ফল খেলে অথবা পাতা খেলে পূর্ণ হয় মনোবাসনা। এলাকায় প্রচলিত রয়েছে নিয়ত করে এই ফল খেলে রোগমুক্তি হয়, নিঃসন্তান সন্তান প্রাপ্ত হয়।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসীর অযত্ন আর অবহেলার শিকার প্রাচীন এই বৃক্ষটি। পোকামাকর আর জীবাণু আক্রমণ করছে, বৃক্ষের চারপাশ দিয়ে দোকান থাকার কারণে গোড়ায় আলো-বাতাস লাগেনা।
এলাকাবাসীরা জানায়, স্থানীয় সাংসদ এই বৃক্ষটির চতুর পাড় বাঁধাই করে দেওয়ার কথা দিলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রাচীন এই বৃক্ষ সম্পর্কে বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, গাছটি সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। কি জাত বা কোন গোত্রের এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য গাছের ফল পাতা ও ডাল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছিল। প্রায় ছয় বছর পেরিযে গেলেও উত্তর আসেনি।
নাটোরের সচেতন মহল ও বৃক্ষ প্রেমিকদের দাবি দ্রুত সরকারিভাবে গাছটি সংরক্ষণ করা হোক।