সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে গঙ্গা নদীতে ভেসে আসা অসংখ্য মরদেহগুলো নদীর তীরে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। গঙ্গার ১১৪০ কিলোমিটার যাত্রাপথে নদীর তীরে ২ হাজারের বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে নদীতে ভাসতে দেখা গিয়েছে অসংখ্য মৃতদেহ। কিছু ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে করোনায় মৃতদের দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর, মিরাট, মুজাফফরনগর, বুলন্দশহর, হাপুর, আলিগড়, বদায়ু, শাহজাহানপুর, কনৌজ, কানপুর, উন্নাও, রায়বরেলি, ফতেপুর, প্রয়াগরাজ, প্রতাপগড়, মির্জাপুর, বারানসী, গাজিপুর, বালিয়া প্রভৃতি জেলায় গঙ্গার তীরে মরদেহ মাটিচাপা দিতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা কানপুর, কনৌজ, উন্নাও, গাজিপুর ও বালিয়ার।
কনৌজের মহাদেবী ঘাটের কাছে সাড়ে তিনশ’র বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে। ঘাটে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান বার বার মরদেহ চাপা দেওয়া হলেও নদীর পানি বাড়লেই তা সরে যাচ্ছে। ফলে অনেক মৃতদেহ আবারও নদীতে ভেসে যাচ্ছে।
উন্নাওয়ের অবস্থা সব থেকে খারাপ। এখানকার দু’টি ঘাট (শুক্লাগঞ্জ ও বক্সার)-এর কাছে ৯০০-র বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে বলে খবর। কুকুর, শেয়ালে অনেক মৃতদেহ টেনে বের করে নিয়ে আসছে। পার্শ্ববর্তী ফতেপুরে গঙ্গার তীরেও মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
কানপুরের শেরেশ্বর ঘাটের কাছেও একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি চার শতাধিকের বেশি মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে সেখানে। মাটি সরে গেলে মরদেহ বের হয়ে পড়ে। আর তার তার উপর বসছে চিল-শকুন।
এ থেকে সংক্রমণ ও দূষণ ছড়াতে পারে বলে আশংকা করছেন পরিবেশবিদ’রা।
পুরো উত্তরপ্রদেশ জুড়ে একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে সেই মৃতদেহের শেষকৃত্যের একটা বিশেষ পদ্ধতি থাকে। এ ভাবে কবর দিলে সেটা শুধুমাত্র পরিবেশের জন্যই ক্ষতিকারক নয়। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের এভাবে নদীতে ফেলে দেওয়া হলে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে পারে। এছাড়া নদীর জল দূষণের আশঙ্কাও রয়েছে।