স্বামী বাবুল আক্তারের পরকীয়া সম্পর্কের জেরে মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মিতুর বাবা। চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বুধবার দুপুরে বাবুল আকতার বিরুদ্ধে মামলা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বাবুল যখন কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তখন এনজিওর এক মাঠকর্মীর সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। বিষয়টি মিতু জেনে যাওয়ায় এ নিয়ে দুজনের দাম্পত্য কলহ চলছিল। মিতু আমাদের বাবুলের পরকীয়ার কথা জানিয়েছিল। আমরা বাবুলের অবিভাবকদের জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো অ্যাকশন নেয়নি।’
মামলা করতে এত দেরী করলেন কেন – এই প্রশ্নের জবাবে মিতুর বাবা বলেন, বাবুলের বিষয়ে তিনি পরে নিশ্চিত হয়েছেন। একই ঘটনায় দুটি মামলা হয় না। যেহেতু এই মামলা শেষ হয়ে গেছে তাই আমি নতুন করে মামলা করছি। নয়তো পুলিশকে একটা মামলা করতে হতো। তারা করেনাই, আমি করছি। পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরে তিনি মামলা করেছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আকতারকে প্রধান আসামী করে মোট ৮জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, বাবুল আক্তার, কামরুল সিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোহাম্মদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ আনোয়ার, মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ সাজু ও মোহাম্মদ কালু।
আজ রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, মিতু হত্যায় বাবুলের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য দায়ের হওয়া একটি নতুন মামলায় তাকে আসামি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মিতু হত্যায় বাবুল আকতারের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। তবে আইন অনুযায়ী পুলিশ চাইলেই মামলার বাদীকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। তাই আমরা আজ তদন্তাধীন মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’
ব্রিফিংয়ের পরপরই চট্টগ্রাম আদালতে বাবুল আকতারের করা মামলার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পিবিআই। পিবিআই চট্টগ্রামের উপপরিদর্শক আজমির হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
এরপরেই মিতু হত্যা মামলা করতে পাঁচলাইশ থানায় যান মিতুর বাবা মোশাররফ।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। ঐ ঘটনায় বাদী হয়ে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তিনি মামলার এজাহারে উলেখ করেছেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকতে পারেন। তবে সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় মাহমুদা হত্যার তদন্ত নতুন মোড় নেয়। অব্যাহতভাবে মাহমুদার মা–বাবা এই হত্যার জন্য বাবুল আক্তারকে দায়ী করে আসছেন।
পিবিআই আজ জানায় মিত্যু হত্যায় বাবুল জড়িত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরপরই আগের মামলার চার্জশিট ও নতুন করে মামলা দায়ের হলো।