কয়েকদিন বাদেই ঈদ। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পূর্ব সুন্দরবনে শিকারী চক্র ও কাঠ পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। হরিণ শিকারসহ বন্যপ্রাণী এবং কাঠ পাচার রোধে সুন্দরবনের বনরক্ষীদের নজরদারী ও টহল তৎপরতা জোরদার করেছে বনবিভাগ।
বন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা, মংলা, চাঁদপাই, মোরেলগঞ্জ, পাথরঘাটার চরদুয়ানী, জ্ঞানপাড়াসহ আশেপাশের অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে একটি বন্যপ্রাণী শিকারী ও কাঠপাচারকারী চক্র। এ চক্রটি সুন্দরবনের ভেতরে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে চোরাই পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে হরিণের মাংস বিক্রি করে। ঈদ সময়ে এই শিকারী চক্র সুন্দরবনে হরিণ শিকারে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, শিকারী চক্রের প্রধান ঘাঁটি পাথরঘাটার চরদুয়ানী ইউনিয়নের জ্ঞানপাড়া, খলিফারহাট, এবং সদর ইউনিয়নের রুহিতা, হরিণটানা,ও পদ্মা গ্রামগুলো। গত এক মাসে্র বিভিন্ন সময়ে বিপুল পরিমাণ হরিণের মাংসসহ কয়েকজন শিকারী আটক হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল রাতে শরণখোলার বনসংলগ্ন সোনাতলা গ্রাম থেকে থানা ১৫ কেজি হরিণের মাংসসহ আলীরাজ হোসেন (২০) ও রেজাউল হাওলাদার (২২) নামে দুই চোরা শিকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৪ই এপ্রিল স্বরুপকাঠি পৌর শহরে গোপনে হরিণের মাংস বিক্রির সময় মোবাইল কোর্ট ১০ কেজি মাংস সহ মমতাজ বেগম নামে এক মহিলাকে আটক করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। শরণখোলা থানা পুলিশ ১লা এপ্রিল ভোর রাতে উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা গ্রামের রাস্তা থেকে পাচারকারীদের কবল থেকে সুন্দরবন থেকে ধরে আনা ঝুড়িবন্দী ৪টি বিরল প্রজাতির তক্ষক উদ্ধার করে।
প্রশাসন ও বনরক্ষীদের নজর এড়িয়ে কাঠপাচারকারীরা ঈদের সময়ে সুন্দরবন থেকে কাঠ কেটে রাতের আঁধারে স্বরুপকাঠিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গোপনে বিক্রি করে থাকে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) শরণখোলা উপজেলা সেক্রেটারি ডা. রুহুল আমীন জানান, বছর জুড়েই কমবেশী শিকারী চক্র সুন্দরবনে হরিণ শিকার করে থাকে কিন্তু আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সংঘবদ্ধ শিকারীচক্র সুন্দরবনে হরিণ শিকারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে মারফত জানতে পারছি।
আসন্ন ঈদের সময় শিকারীদের কবল থেকে হরিণসহ বণ্যপ্রাণী রক্ষা এবং কাঠ পাচার রোধে বন বিভাগের সকল ষ্টেশন ও টহল ফাঁড়িকে বনে নজরদারী জোরদার ও টহল তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো: বেলায়েত হোসেন।
(সংবাদ সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক)