মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার আহ্ববান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন ১০টি জাতীয় ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশান ।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী কমিটির সদস্য হানিফ খানের প্রেরিত এক বিবৃতি বার্তায় জানানো হয়েছে-
সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি যে, উন্নয়নের নামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বহুসংখ্যক বৃক্ষরাজি কর্তন করে এখানে হোটেলসহ বেশকিছু ইট পাথরের স্থাপনা নিমার্ণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের জনবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এসবই করা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষার জন্য। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, যে বিশাল উদ্যানে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনানুষ্ঠানিক ঘোষনা দিয়েছিলেন সেই উদ্যানকে খন্ডিত করে ইট পাথরের কাঠামো এবং হোটেল-রেস্তোরা বানিয়ে কোন অবস্থাতেই ধ্বংস করা যাবে না। ইতিহাসকে রক্ষা করতে হলে তার পরিবেশ এবং স্থানিক অবস্থানকেও রক্ষা করতে হয়। ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের ব্যঞ্জনা উপলব্ধি করতে পারে তার জন্যই এই বিশাল চত্তর বা উদ্যানের অবয়ব সংরক্ষন করা জরুরি। আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের স্থানটিতে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ভাস্কর্য নির্মাণ করে সামনে বিশাল খোলা প্রান্তর অক্ষত রাখা হোক। আর যে স্থানটিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পনের দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছিলো সে স্থানেও স্মারক বা স্মৃতিফলক রাখা হোক। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকল ধরনের হোটেল নির্মাণ ও পাঁচশত গাড়ি পার্কিং এর পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে- মনে রাখতে হবে এটি কোন বিনোদন কেন্দ্র নয়-ঐতিহাসিক স্থাপনা।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১৬ই জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নারিকেল গাছের চারা রোপন করে এই উদ্যানকে সুশোভিত করতে চেয়েছেন। অথচ আজ এই উদ্যানের বৃক্ষরাজি কর্তন করে জীববৈচিত্র ধ্বংস এবং অক্সিজেনের অফুরন্ত উৎসকে নিধন করা হচ্ছে।
আমরা অবিলম্বে উন্নয়নের নামে ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিনাশকারী এই অপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি উদাত্ত আহ্ববান জানাই।
বিবৃতিদাতা সংগঠনসমূহঃ হচ্ছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদ, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা, বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, আইটিআই, বাংলাদেশ কেন্দ্র ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার।