মধ্যরাতের কবিতা
।।এক।।
এই যে এই চাঁদপানা রঙ শরীরে
টলমলে জল
জল টলমল
বুকে দুধশাদা শঙ্খ
কোমল আগুনে
পোড়াও তারাদের।
নীল শাড়ি খুলে
আকাশ বানাও
স্বর্গ আঁক চাঁদুরে।
একজোঁড়া খরগোশ
মুঠোর ভেতর
মেঘের ঘ্রাণ ঠোঁটে
আহা!অমৃত
ওহ!অমৃতা।
সবুজ পাতাটার মতো
লাজুক বীপ্লব
ঢেউ আর ঢেউ
হাটু ভেঙে সমুদ্র প্রার্থনায় বসে
তোমার উঠোনে।
চাঁদ ডুবে যায়
অন্ধকারে ছো’মারে চিল
সোনানী ডানার আমাদের বিষাদ,
উড়ে তোমার শীৎকার;
ঘুমভেঙে ঈশ্বর ডুকে পরে
অমৃত স্নানঘরে।
।।দুই।।
তুমি শরীর খোল
আলৌকিক ঘ্রাণে
কেপে উঠুক স্বর্গলোক।
ঊর্ধ্বলোকে বৃত্ত
পারিজাতের ফুল
সবুজ পাহাড়ে
পাখিদের উল্লাস
চূড়ায় খয়েরি বিন্দু
তৃষ্ণার্ত আঙুলে
চাতক বেহালা।
চিবুক,চুল,ঠোঁট,স্থীর চোখ
কি দারুণ স্থাপত্য
লুকোই চুমুর ভেতর।
নাভী ও নন্দন।
নিম্নভূমিতে ত্রিকোণ
ছায়াঘন সুনসান সৈকত
ঘন কালো মেঘে ঢাকা
প্রাচীন গুহামন্দিরে
নোনাগন্ধী নেশা ধূপ
পূজোয় যাবে শ্যামঠাকুর।
ঈশ্বর সুপার আর্কিটেক্ট-
তোমাকে শরীর ছুঁয়ে
স্বর্গ জেনেছি…
।।তিন।।
বারান্দার টবে আকাশ চারা
শরীরের নীলে পোষাচাঁদ
টুপ টুপ পাপড়ি ঝরে
তোমার ঠোঁট ঘেঁষে
দাঁড়ায় এসে
আমার যত
উৎসব।
আহা! মৌনতা
ব্রা খোলো এবার
এক রাঙা রাত লিখি
বহুরঙ আলোর ক্যানভাসে।
ভ্যান গর্গ
ডুবে যায় অতলে
তোমার উঠোনে রঙ যত
ঠোঁটে জিহ্বে মেখে নেই নোনা স্বাদে।
দূর নক্ষত্রে জ্বলে জ্বরে ওঠে দীপ
তোমার বুকে শুভ্র শুকতারা
সেঁতারের মতো বাজাও
তুমি আমাকে তুমুল,
নাকি আমি বাজি
তোমাকে ছুঁয়ে।
প্রেম
অনেক হলো
ভালোবাসা-বাসি হলো
একার খুলে দাও গুপ্ত দরজা
প্লিজ খুলে দাও, চিত্রকলা
গুহাচিত্রে ডুকে পরি
আদিম প্রার্থনার
আহ্লাদে।
।।চার।।
তোমার শরীর নিঙড়ে শব্দ তুলি।
চাঁদেরগুড়ায় মাখানো মেঘের মুড়ি
বকুল আর বেলফুল মগ্ন সন্ধ্যায়
আমরা চোখে চোখে পানকরি মুগ্ধতা
এক চামচ মৌনতা ঠোঁটে
নীড়ে ফেরা পাখিদের উষ্ণতা লেখি
পরস্পরের শরীরে।
বৎসায়ন হাটু ভেঙে বসে শিল্পের প্রার্থনায়
আর্যবর্তের টেরাকোটা ম্লান হয়ে আসে ক্রমে
গ্রীক রোম ভাস্কার্যরা মুখ লুকায় লজ্জায়
শাড়ি ব্রা খুলে তুমি মাতাল জ্যোৎস্নায়
গুপ্তযুগ চিত্রকলা সমস্ত
স্থাপত্যের জ্যামিতিক বিন্যাস
সরল রেঁখায় বুঝিয়ে দাও
মৃদু আলোর কোমল কম্পনে।
ধীরে বয়ে যায় মিথলজির নদী
স্টিক্স তোমার গোপন ইচ্ছের ভিতর;
ওষ্ঠে অধরে চাঁরু আদরে চুসে নাও
ফ্লেজেথনের সবটুকো আগুন-
নোনা মন্দির খুলে দাও দেবী এবার
অমৃত পুকুরে ডুবে দিবে
তৃষ্ণার্ত পুরোহিত।
।।পাঁচ।।
পাখিদের ডাকনামে মেঘেরা ঘরে ফিরে
তুলতুলে তুলো মেঘ শরীরে তোমার
বৃষ্টির ঘ্রাণে ক্রমে কোমল হয়
প্রসূতি মৃত্তিকা-
বিষণ্ণ মাঠে
চাষ করি
অনিবার্য সবুজ
তুমি দুলে ওঠো ধানের
সতেজে, মাঠের পূর্ণমগ্নতায়-
অনার্য চাষার নাঙল ডুবে যায় জমিনে।
আহাহহহ! ইসসসস!
অনুপ্রাসে বিন্যাসে
শব্দে ও সংগীতে গাঢ় হয়
চাঁদের রঙ। জোয়ার ওঠে সমুদ্রে
আরো গভীরে আরো গভীরে, নিমগ্ন হই
আর্যায়নে তো আমরাই এনেছি
অনার্য কৃষকের নাঙলে।