রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার মালিক শাহ আলমের ছেলে ও বসুন্ধরা গ্ৰুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে বান্ধবীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ দুপুরে নিহত মোসারাত জাহান মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর-২৭।
নিহত মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার মনোহরপুরের উজীর দীঘির পাড়ে৷ সে রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান।
জানা গেছে, গুলশান-১ এর ১৯ নং ওয়ার্ড, রোড নাম্বার #১২০, বাড়ি নাম্বার # ১৯, ফ্ল্যাট বি-৩ তে দুই মাস পূর্বে এক লক্ষ টাকায় ভাড়া নিয়েছিলেন আহমেদ সোবহান আনভীর। আহমেদ সোবহান আনভীর উক্ত বাসার ভাড়া দিতেন এবং প্রায়ই ঐ বাসায় আসা যাওয়া করতেন। বাসাটিতে মুনিয়া একাই থাকতো।
গুলশান থানা পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে রাত সাড়ে আটটায় নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং লাশ এর সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। থানা কর্তৃক পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণ হাতে আসলে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গুলশান থানার উপপুলিশ কমিশনার আরও জানান, “মেয়েটির সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সম্পর্ক দুই বছরের। আনভীর এক বছর মেয়েটিকে বনানীর ফ্লাটে রাখেন। পরে আনভীরের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি কুমিল্লায় চলে যান। তবে মার্চ মাসে ঢাকায় এসে গুলশানের ওই ফ্লাটে থাকা শুরু করেন।
আরও গানা গেছে, গত ২৩শে এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় গুলশানের ওই বাসায়। ইফতার পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হলে মেয়েটির সঙ্গে আনভীরের মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যে কোনো মুহূর্তে তার যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে।’
আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার অডিও কথোপকথন
এই ফোনের পর কুমিল্লায় থেকে সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। তবে গুলশানের ফ্লাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তরুণী ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কোন ঘটনা নয়। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়ত সরকার থাকাকালীন বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছোট ছেলে সাফিয়াত সোবহান সানবীর কর্তৃক একই গ্রুপের তৎকালীন পরিচালক হুমায়ুন কবীর সাব্বিরকে হত্যার অভিযোগের লোমহর্ষক ঘটনা তারেক রহমানের হস্তক্ষেপে ২১ কোটি টাকার বিনিময়ে রফাদফা হয়েছিল বলে সুস্পষ্ট অভিযোগ আছে। যার কোন ন্যায় বিচার আজ পর্যন্ত হয় নি।