অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মাকে হাসপাতালে পৌছে দেয়া সন্তানের চিকিৎসা শেষে মন্তব্য।
এ বিজয় অদ্যাবধি জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজয়’ অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে বহন করে অক্সিজেন প্রবাহ কমতে থাকা কভিড-১৯ আক্রান্ত মাকে হাসপাতালে পৌছে দেয়ার সন্তানের এই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। মাকে বাঁচাতে সন্তানের এই আকূতি পরবর্তীতে দ্য ডেইলী স্টার সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
হাসপাতালে তার মা সুস্থ হবার পর ভি চিহ্ন দেখিয়ে মা সহ সেই মটরবাইকের ছবি তুলে, সন্তান জিয়াউল হাসান ফেইসবুক স্ট্যাটাস এ লেখেন- ’৬ দিন মুমূর্ষু মা-কে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রেখে পুরোপুরি সুস্থ করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ! অক্সিজেন সেচুরেশন ৭০ অবস্থায় মা-কে বাচাঁনোর নিমিত্তে নিজ শরীরে ৮ লিটার মাত্রার চলমান ২০ কেজি ওজনের অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে যে বাইকে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম, আজ মমতাময়ী মা তার ফুসফুসে অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৬ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে সেই বাইকে করেই। এ যেন সৃষ্টিকর্তার নেয়ামত।
সমগ্র দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা, যাদের আন্তরিক দোয়ায় আমার মা-কে মহান সৃষ্টিকর্তা এ যাত্রায় সুস্থ করে দিলেন।
এর আগে তিনি ১০ এপ্রিল নলচিঠিতে নমুনা পরীক্ষা দিয়েও কোন ফলাফল জানতে না পারলেও তার মা নলছিটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রেহানা বেগম নিজ বাড়িতে আইসোলসনে ছিলেন। ১৫ই এপ্রিল পুনরায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি করোনা উপসর্গের নমুনা পরীক্ষা করতে দিলেও ১৭ এপ্রিল ভর্তি পরীক্ষার আগে ফলাফল জানতে পারেননি। হাসপাতালে ভর্তির পরে রাতে তার করোনার নমুনা পরীক্ষার ফল পজেটিভ আসে, বলে জিয়াউল হাসান জানান।
এসময় তিনি বলেন ’করোনা নমুনার পরীক্ষার ফলাফল সময়মতো পেলে হয়তো তিনি যথযথ সময়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারতেন’ ঝালকাঠী কৃষি ব্যাংক কর্কর্মকরতা জিয়াউল হাসান গনমাধ্যমকে জানান ১৭ এপ্রিল মায়ের স্যাচুরেশন (শরীরের অক্সিজেন প্রবাহের মাত্রা) দ্রুত কমছিল। এসময় নলছিঠি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডাক্তার মেহেদী দ্রুত বরিশাল শের-ই কাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে (শেবাচিম)এ নেয়ার কথা জানালে, আমি অ্যাম্বুলেন্স এমনকি কোন থ্রি হুইলার ও পাচ্ছিলাম না। লকডাউনের মধ্যে কোন যান খুঁজে না পেয়ে নিজ শরীরে গামছা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে নিজেই মটরসাইকেল চালিয়ে শেবাচিম এ বিকেলে ভর্তি করি। হাসপাতালে নেয়ার পরে মায়ের অবস্থার উন্নতি হলে ৬দিনের চিকিৎসা শেষ করে মাকে নিয়ে ফিরছি’। ’আমার কাছে এ বিজয় অদ্যাবধি জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজয়।’
শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও করোনা ওয়ার্ডের ইনচার্জ ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন জানান জিয়উল হাসানের মা, রেহেনা বেগম করোনা ওয়ার্ডের দোতলায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তার পরিস্থিতি মারাত্মক ছিল না, অক্সিজেন স্যচুরেশন নরমাল অবস্থায় ফিরলে তাকে রিলিজ দেয়া হয়।