মৌলভীবাজারের জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, ছাত্র, জনতা ও রাজনৈতিক কর্মীরা মিলে হাইল হাওরে কৃষকের বোরো ধান কেটে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকালে উপজেলার হাইল হাওরের কালাপুর ইউপি বরুনা গ্রামে এই ধান কাটা হয়। ধান কাটায় যোগ দেন উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের ১৯ জন কর্মকর্তা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষক ও দপ্তরি, ৩০ জন ছাত্রলীগ কর্মী, সবুজবাগ ম্যারাথন গ্রুপের ১২ সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয় চা সংসদের ৯ জন, উদ্দীপ্ত তারুন্য সংঘঠনের ৭ জন ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
চলতি সপ্তাহে সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গতকাল বুধবার (২১ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসনের ফেইসবুক পেইজে স্বেচ্ছাশ্রমে হাওরে কৃষকের ধান কেটে দেয়ার আহব্বান জানান।
উপজেলা প্রশাসনের ডাকেই সাড়া দিয়ে সবাই মিলে ধান কাটা উৎসবে নেমে পরেন। তারা বরুনা গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়ার আড়াই কেয়ার ও জসিম উদ্দিনের দেড় কেয়ার ধান কেটে দেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, এবছর উপজেলায় ৯৬৫২ হেক্টর জমিতে বোর ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্য ২৭২৭ হেক্টর জমি হাওরের নিম্নাঞ্চলে।
ইতিমধ্য ২০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আর ও ২০ শতাংশ ধান কেটে ফেলতে পারলে আমাদের কোন প্রাকৃতিক ঝুঁকি থাকবে না।
কৃষক রুবেল মিয়া জানান, তিনি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছিলেন না। এই ধান কাটাতে তার পাঁচ হাজার টাকা খরচ হতো।
জসিম উদ্দিন জানান, দুর্যোগের পূর্বাভাস জেনে তিনি খুব চিন্তায় ছিলেন। তার জমির ধান কেটে দেয়ায় তিনি এখন নিশ্চিন্ত ও আনন্দিত।
বিশ্ববিদ্যালয় চা সংসদের সভাপতি মনোজ কুমার যাদব বলেন, উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পোষ্ট দেখে আমরা ইউএনও স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কৃষকের ধান কেটে দিতে পারায় আমাদের খুব ভাল লাগছে।
আমাদের এ অঞ্চলের বোরো ফসল যদি বন্যার পানিতে ডুবে যায় তা হলে উৎপাদনের ২৫ শতাংশ ধান ক্ষতি হবে।
উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা আবহাওয়া অফিস থেকে তথ্য পেলাম সিলেট অঞ্চলে ২১ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে হাওর অঞ্চলে বর্ন্যা হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে হাওর অঞ্চলে ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। যদি বন্যা হয় তাহলে সব ধান পানিতে তলিয়ে যাবে। এতে কৃষকদের যেমন ক্ষতি হবে, ঠিক তেমনি আমাদেরও ক্ষতি হবে। কারন পাকা ধান থেকে চাল হয়েই আমাদের আহার ও খাদ্যের যোগান দেয়। মূলত এজন্যই আমরা সেচ্চাশ্রমে কৃষকের ধান কেটে দেয়ার উদ্যোগ নেই ও সকলের সাড়া মিলে কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছি।