পাঁচ পর্বের সমাজ-ভাবনা; কোভিড-১৯ এর দায় কার! (চতুর্থ পর্ব)
তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে মেধাবীদের পাখা গজালে, অস্থির-অনিশ্চয়তার দেশ ছেড়ে অনেকে স্থায়ী উড়াল দেয়, নিশ্চিন্তের সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে…! প্রিয় দেশ, রক্ত বা দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক নির্ভরতার প্রধান মাপ-কাঠি থাকেনা। তাই, ক্ষণিকের মোহে অনেকে এসব ছেড়ে নিরুদ্দেশের পথে পা বাড়ায়। সামনে গাধার ন্যায় শান্তি-নিরাপত্তা-অর্থ-প্রাচুর্যের মুলা ঝুলানো..! মানুষ সেথায়, সময়ের চাকায় কুলুর বলদের ন্যায় ঘানি বাঁধা কাগুজে নোটের গোলাম! সেই মেকি ফলের আশা-আকাঙ্ক্ষায় দিশেহারা অনেকের মানব জীবন! সেথায় কি স্বাদ-শান্তি বিরাজমান তা এখন চাক্ষুষ, তবে শান্তি কোথায়! এক সময় যেথায়, মানুষের দেওয়া হতো দ্বীপান্তর! সেথায় আদর আহ্লাদ বিকশিত হওয়ার সুযোগ হচ্ছে বিশ্ব মেধাবীদের, সেই কারণে হয়তো তারা সবসময় বিশ্বমোড়ল বিধাতা! অন্যদিকে…
সর্বজনস্বীকৃত, সেই সব মেধাবী দার্শনিক-গবেষক-লেখক-ভাবুকেরা নগদ প্রাপ্তির আশা না করে, নাওয়া-খাওয়া ভুলে সর্বোচ্চ মেধা ও জ্ঞান দিয়ে দিন-রাত গবেষণায় থাকেন মত্ত..! মানুষের কল্যাণে সৃষ্টি করেন ব্যতিক্রম অনেক কিছুই, যা হয়তো সাধারণের ভাবনার অতীত কিন্তু সংগোপনে বিশ্ব মোড়লী টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, নিজ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আরো সুদৃঢ় করতে, সেই সব আণবিক-পারমাণবিক-রাসায়নিক-স্যাটেলাইট, এমনকি অনুজীব অস্ত্র হিসেবে প্রকাশ্যে-গোপনে, সদরে-লুকায়ে গণমানুষের মরণ-কল হিসেবে ব্যবহৃত! যা দিয়ে, বিশ্বময় মানুষকে কথায়-বার্তায়, প্রায় সময়-অসময়ে, জুজুর ভয় দেখিয়ে ছলে-বলে-কলে-কৌশলে ঘুম পাড়ানি গান শোনানো হয়! এই মহাদূর্যোগ মহামারীতে তা আরো প্রকট হয়েছে; অবিশ্বাস্য..!
তাই, এখনো অজানা কোভিড-১৯ সৃষ্টি, রহস্যময়তার চাঁদরে আবৃত! কিন্তু গোলাকার এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই চাপা থাকে না, একদিন প্রকাশিত হয়। ভবিষ্যতই অবলীলায় বলে দিবে একদিন! এই ঘাতক ভাইরাসের আদি জন্ম ও বিস্তারের ইতিহাস…! বর্তমান প্রচার মাধ্যমের প্রাপ্ত খবর মতে, মানুষের সীমাহীন ক্ষুধা নিবারণে নির্বিচারে রুচিহীন-অখাদ্য-কুখাদ্য ভক্ষণের ফল, পরিবেশের বিপরীত প্রভাবে (reverse effect) কুফল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ সংক্রামক! এর দায় কার!
বাকহীন ধরণীর উপর দায় চাপিয়ে, প্রকৃতি বিপর্যয়কারী দানব বিশ্বমোড়লরা নিশ্চিন্তের স্বর্গে বাঁশি বাজায়! তখন ,প্রায় সারা বিশ্বের লোক হ্যামিলনের বাঁশির সুরের তালে তালে আমোদ আহ্লাদে নাচানাচি করে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতই! তাইতো সুকৌশলে বিশ্বমোড়লরা নিজেদের চামড়া বাঁচাতে নিজেদের মতো করে দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংজ্ঞা রচনা করেছেন। এখানে তাই, সব কবিতায় নীরব!
সেই নিরবতার অসৎ সুযোগে সুযোগসন্ধানী মানুষ,এমনকি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, প্রাকৃতিক সম্পদের অসীম পুঁজির পুঞ্জিভূত ভান্ডার দিনে দিনে নির্বিচারে ভেঙে খেতে খেতে পৃথিবী এখন দেউলিয়া হতে বসেছে…! ধরণী মাতা অস্তিত্ব রক্ষার্থে অশনিসংকেত, করোনার (কোভিড-১৯) মত তাই, সর্বত্র এখন গণ-প্রাকৃতিক দুর্যোগের কুফল মাত্রাতিরিক্ত গরম, শীত,বজ্রপাত ,দাবানল! অসময়ে বন্যা ,নানা ধরনের পঙ্গপাল ও ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গোটা শরিত্রী কিংকর্তব্যবিমূঢ় তখনও অধিকাংশ দেশ, বেহুশ হয়ে প্রকৃতি ধ্বংসের খেলায় অবলীলায় মত্ত কিন্তু লোকালয় বা বনাঞ্চলে দাবানল হলে দেবালয় কি রক্ষা পায়? তাই বাস্তব প্রমাণ; প্রকৃতি তার সন্তানের ভাবনায় বড্ড বেজার হয়ে আর্তনাদ করে, ভৎসর্না করে reverse diversity গুটি কয়েক প্রকৃতির শত্রুর কারণে, এভাবেই গোটা মানব জাতিকে তার চরম মূল্য দিতে হয়, এ দায় কার!
(চলবে…)