নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টে নারীসঙ্গী সহ অবরুদ্ধ হইয়ার ঘটনায় দেশও জুড়ে ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে আজ দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার সময়ে থেকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ।উপকমিশনার (ডিসি) হারুন-অর রশিদের নেতৃত্বে এই গ্রেফতার অভিযান চলে।মামুনুল হককে গ্রেফতারের পর প্রথমে শ্যামলীতে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেখান থেকে দুপুর ২টায় তাকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়ে হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
এই রিপোর্ট লেখার সময়ে জানা গেছে, (রবিবার রাতে) মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও থানা থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় ১৭টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক। এরমধ্যে ১৫টি মামলা পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করে।আর বাকি দুটির মধ্যে এক যুবলীগ নেতা ও একজন সাধারণ মানুষ বাদী হয়ে দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্র জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের পর ১৫টি মামলার আসামি হেফাজত নেতা মামুনুল হক। করা হয়েছে।মামলাগুলোর বাদী হয়েছে পুলিশ। সর্বশেষ এ বছরের ৫ এপ্রিল পল্টন থানায় যুবলীগের এক নেতা বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মোহাম্মদপুর থানায় মামুনুলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন সাধারণ এক ব্যক্তি।
ডিএমপির একটি সূত্র জানায়, ডিবির মতিঝিল বিভাগে ৮টি মামলা, লালবাগ বিভাগে দুটি ও তেজগাঁও বিভাগে একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এই হেফাজত নেতা। এসব মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এ ছাড়া মতিঝিল থানায় একটি ও পল্টন থানায় ৪টি মামলায় আসামি মামুনুল হক। এসব মামলার মধ্যে ১৫টি হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের ঘটনার পর।
এছাড়াও ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের একাধিক মামলাতেও মামুনুল হকের নাম রয়েছে। এসব মামলায় ধারাবাহিকভাবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। খুব সহসাই আদালত থেকে জামিন নিয়ে পুলিশি হেফাজত ও কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, সবগুলো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মামুনুল হককে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রাজধানী ঢাকার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ঢাকার বাইরে মামলাগুলোতেও গ্রেফতার দেখানো হতে পারে। ফলে আদালত থেকে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করলেও সহজেই তার মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সবগুলো মামলায় জামিন পাওয়া সম্ভবপর হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত বছর মোহাম্মদপুরে একটি ভাংচুরের মামলায় তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় আজকে দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মামুনুল হককে। জানান ডিসি হারুন অর রশিদ বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মতিঝিল, পল্টন ও নারায়ণগঞ্জে আরও কয়েকটি মামলা আছে। পরে ওই মামলাগুলো সমন্বয় করা হবে।