আজ শনিবার বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা এবং সাবেক সাংসদ ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন মির্জা আব্বাস।
বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ৯বছর পরে ইলিয়াস আলীর ‘গুমের’ পেছনে দলের ভেতরে থাকা কয়েকজন নেতাকে দোষারোপ করলেন মির্জা আব্বাস। ওই সব নেতার নাম উল্লেখ না করে তিনি আরও বলেন, দলের ভেতরে লুকিয়ে থাকা এই ব্যক্তিদের অনেকেই চেনেন। আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াস আলীকে গুম করেনি।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে এক ব্যক্তির সঙ্গে ভীষণ তর্ক বিতর্ক হয়। ইলিয়াস খুব বাজে ভাষায় তাকে কটাক্ষ করেছিলেন। সেদিন রাত দেড়টা থেকে পৌনে দুইটায় ইলিয়াস আলীকে গুমের সংবাদ পাওয়ার পর পরিচিত যারা ছিলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি, ইলিয়াস আলীকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং যে পুলিশ কর্তকর্তাদের সামনে তাকে নেওয়া হলো, সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এই খবর আপনারা কেউ জানেন না। পুলিশের গাড়িতে যে কজন কর্মকর্তা ছিলেন, তাদের আজও পাওয়া যায়নি। যেমন ইলিয়াস আলীর চালককেও পাওয়া যায়নি। তাহলে এই কাজটা করল কে?’
দলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে তিনি এসব নেতাদের দল থেকে বের করে দেবার দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, সেই যে পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো, আমার দলে এখনো রয়ে গেছে। যদি এদের দল থেকে বিতাড়িত না করেন, তাহলে কোনো পরিস্থিতিতেই দল সামনে এগোতে পারবে না।
বক্তব্যে মির্জা আব্বাস প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আমি জানি আওয়ামী লীগ সরকার গুম করেনি। তাহলে গুমটা করল কে? এই সরকারের কাছে এটা আমি জানতে চাই। একজন জলজ্যান্ত তাজা রাজনৈতিক নেতা গুম হয়ে গেল দেশের অভ্যন্তর থেকে। আমাদের একজন নেতাকে দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেল, সালাউদ্দিনকে। আমাদের চৌধুরী আলমকে গুম করে দেওয়া হলো। আমাদের কত ছেলেদের গুম করে দেওয়া হলো, বুঝলাম এই সরকার করে নাই। করল কারা? যারা করল, তাদের কি বিচার হতে পারে না? যারা করেছে, তারা এই দেশের স্বাধীনতা চায় নাই? তারা স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব দেশে থাকতে দেবে না।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। এত দিন বিএনপি অভিযোগ করে আসছিল, এম ইলিয়াস আলীকে আওয়ামী লীগসরকারই ‘গুম’ করে রেখেছে। সে সময়ে এই নিখোঁজ জাতীয়তাবাদী দলের নেতার সন্ধানের দাবিতে সিলেটের বিশ্বনাথে সপ্তাহব্যাপী হরতাল পালিত হয়।
সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মেলনী–ঢাকার উদ্যোগে ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।