আমার ঘরহীন হবার ইচ্ছে ছিল,
অনন্ত পথের বন্ধনহীন
বাউল হবার ইচ্ছে ছিল,
অনন্ত পথকে সঙ্গী করে হেঁটে যাবার ইচ্ছে ছিল।
কোন পিচঢালা পথ নয়,
মেঠোপথের মায়া ছুঁয়ে, সবুজ ঘাসে পা ফেলে
সম্মুখপানে যাবার ইচ্ছে ছিল।
শুণ্য সীমানা ধরে রাজনীতির বাধা ছাড়িয়ে
মাটির পরে সবুজ ঘাস পথ পেরিয়ে
হারিয়ে যাবার ইচ্ছে ছিল।
ঠিক নিঃসঙ্গ কোন মুক্ত পাখির মতো,
ইচ্ছেমতো পাখা মেলে উড়ে যাবার ইচ্ছে ছিল।
উড়ে চলা পাখির কোন সীমানা নেই,
থামিয়ে দেবার কেউ নেই।
নেই তাক করে দাঁড়িয়ে থাকা সীমান্ত রক্ষীর বন্দুক।
থাকবে না কোন রক্ত নেশার চোখ।
চাইনা আমি কোন বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা
কিংবা কূটনৈতিক নিয়ম-কানুনের হাতকড়া।
সময় পেরিয়ে গেল, হলো আমার কিছুই করা।
আমারও তো লোভ ছিল, লালসা ছিল,
স্বাদ গ্রহণের জন্য জিহ্বা ছিল,
আমার ঠোটে মুখে জিভে নাকে
লেগে ছিল ভোজন ভোগের অমৃত স্বাদ।
মস্তিষ্কে ছিল সাদাকালো বোধ।
আমার এই স্বাদ ও বোধ আমাকে রুদ্ধ ঘরের শেকলে বেঁধেছে।
বিশ্ব মোড়ল ব্যবসায়ীদের স্বাদ-ফাঁদ-ভোগ নিয়মে,
আমিও আসলে লোভী স্বাদে গন্ধে আধুনায়
হয়ে গেলাম বদ্ধ ঘরের ছায়ার কীট।
নিশি আসে দিন যায়, দিন যায় নিশি আসে
তবু নিশুধ জীবন ডাকে না আমাকে,
ডাকবে কি করে আমি বন্দী হয়েছি আধুনায়।
আর্তচিৎকারে বলি- – শোন হে
এ নিয়ম শৃঙ্খলা আইন-কানুন
তোমাকে বন্দী করার জন্য হে যাযাবর বোহেমিয়ান বিহগ।
এতো কিছুর পরেও
আমি কোন ঘরের মতো,
কিংবা কোন ঘরই আমার মতো না,
তাই ফিরবো না
ফিরবো না মহামায়া,
যদিও তোমার অপেক্ষা মহামায়া ।
যদিও আমি এখন লোভী
তবুও আমি এখনো যাযাবর, বোহেমিয়ান বিহগ
দুপাশেই আমার বাস আমার নিবাস
মাঝে মাঝে হারাই উত্পাত নিবৃত্তি দুর্গমে ।।