এটি; পারসিক শ্বরবিজ্ঞানের পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণীর একটি ‘ছদ্মনাম পরিভাষা’। এর বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা ‘ঊষা’, বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা ‘সকাল’, বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা ‘আদিত্য ও বালেন্দু’ ও বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা ‘প্রতিপদ ও সোমবার’। এটি; পারসিক শ্বরবিজ্ঞানের বহুল ব্যবহৃত একটি পরিভাষা। শ্বরবিজ্ঞানের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পরিভাষায় এটি ব্যবহৃত হয়। সেজন্য; সহজে এটি পাঠক শ্রোতার দৃষ্টিগোচর হয় না।
ইসলামী সাম্প্রদায়িক বিশ্বাস মতে; শবে বরাত হচ্ছে আরবী শা’বান মাসের ১৫ তারিখে পালিত একটি পূণ্যময় রাত। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মুসলমানগণ অতীব পুণ্যের কাজ মনে করে এটি পালন করেন। এই রাতকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বলা হয়। আরবি ‘বারায়াত’ পরিভাষার অর্থ অকপটতা, উদ্ভাবনকুশলতা, উদ্ভাবনী, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, উদ্ভাবনপটুতা। ইসলামী পৌরাণিক বিশ্বাস মতে; এ রাতে বহু সংখ্যক মানুষ আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও আশীর্বাদ লাভ করেন। অর্থাৎ; স্বরূপ দর্শন করে মুক্তিলাভ করেন। তাই; এ রজনীকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারায়াত’ বলা হয়। অর্থাৎ; সিদ্ধি উদ্ভাবন বা ‘নিষ্কৃতির রজনী’ বলা হয়।
এই রাতের ব্যাপারে কুরানে সরাসরি কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না। তবে; একটি কল্যাণময় রাতে সেটি/ ঐটি/ এটি/ ইহা/ উহা অবতরণ করি, করা হয়, করা হয়েছে; এমন কথা কুরানের অনেক স্থানেই আছে। তাহলে সেটি কি? বৈখ্যিকগণ কেউ বলেছেন; কুরান; কেউ বলেছেন; করুণা; দয়া ইত্যাদি। যাইহোক একটা কিছু যে অবতরণ করে এটা ঠিক। আত্মদর্শন না জানার কারণে সেই বিষয়টি মুসলমান এখনও বের করতে পারে নি। এসব কারণে শবে বরাতের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে মুসলমানদের উপদলের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে। নব্য সালাফিরা শবে বরাতকে সমর্থন করে না। তারা একে বেদাত নামে ফোতোয়া দেয়।
শবে বরাতের অন্যান্য নাম
লাইলাতুল বরাত।
লাইলাতুল দোয়া।
ইরান ও আফগানিস্তানে নিম শা’বান।
আরবী ভাষাভাষীগণ বলেন নিসফ্ শা’বান।
মালয় ভাষাভাষীগণ বলে নিসফু শা’বান।
তুর্কি ভাষাভাষীগণ বলে বিরাত কান্দিলি।
ভারতীয় উপমহাদেশে বলা হয় শবে বরাত।
বাঙালী পুরাণে বলা হয় কোজাগর।
শ্বরবিজ্ঞানে; দেহবিশ্বের মঙ্গল পর্যায়ের প্রথম প্রহর বা প্রথম সাড়ে তিন দিন সময়কে সোম পর্যায় বা সোমবার বলা হয়। সোমপর্যায় বা সোমবারকে শ্বরবিজ্ঞানে ‘ঊষা’ বলা হয়। বেদ ও কুরানে ঊষা নিয়ে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। দেহবিশ্বের ঊষা-প্রহরে মানবদেহে সোম প্রতীতির আগমন ঘটে। এজন্য; একে সোমপর্যায় বা সোমবার বলা হয়। মানবদেহে সোমবারে সোম প্রতীতি অবতরণ করে। অতঃপর; মাত্র এক প্রহর বা সাড়ে তিন দিন অবস্থান করেই প্রস্থান করেন। শ্বরবিজ্ঞানে; সোমনাথ বা সোম দেবতাকে জীবের পালনকর্তা বা সাঁই বলা হয়। উল্লেখ্য; সোমনাথ বা সাঁই দেবতাকে আরবি ভাষায় রব (ﺮﺐ) বলা হয়। সোম, সাঁই বা রব (ﺮﺐ) দেবতার আগমনকালকে হিন্দু পুরাণে ‘কোজাগর’ এবং ইসলামী পুরাণে ‘শবে বরাত’ (ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ) বলা হয়।
সারা বিশ্বের সর্ব ঘরানার আত্মজ্ঞানী দার্শনিক মনীষীদের সর্ব সম্মতিক্রমে সোমপর্যায় বা সোমবার প্রতিপদের একটি প্রহর মাত্র। জীবকুলের পালনকর্তা সাঁই জীব লালনপালন করা ও সাথে সাথে সাধকদের সাথে দর্শন দান করার জন্য প্রতি মাসে এক প্রহর অমৃত-জল রূপ ধারণ করে বৈকুণ্ঠে অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যেই মহাসাধক বা সিদ্ধসাধকগণ সাঁই বা সোমনাথের সাথে প্রত্যক্ষ দর্শন লাভ করে মানব জন্ম ধন্য করেন। যারাই সোমনাথ বা সাঁইয়ের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দর্শনলাভ করেন তারাই সাঁইজি, বৈষ্ণব, সাঁইচারী, সাঁইবিহারী ও নায়িবে রাসুল ইত্যাদি উপাধিলাভ করেন। সোমপর্যায়ের দৈর্ঘ্য সর্ব সম্মতিক্রমে প্রতিপদের প্রথম এক প্রহর। এক প্রহর সমান সাড়ে তিন দিন। অর্থাৎ; সোমপর্যায় বা সোমবারের দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন দিন।
একদিকে; বাংভারতীয় হিন্দুরা কোজাগরে মন্দিরে মন্দিরে তাদের বিষ্ণুকে অন্বেষণ করে থাকেন। অন্যদিকে; মুসলমানরা শবে বরাতে (ফা.ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ) মসজিদ, মাজার, দরবার, খানকা ও তীর্থে তীর্থে তাদের রবকে (আ.ﺮﺐ) অন্বেষণ করে থাকেন। অন্যদিকে; আত্মজ্ঞানী ও মরমী সাধকগণ কেবল আপন দেহের মাঝেই স্ব স্ব সাঁইয়ের অন্বেষণ করে থকেন। ঊষার কোন্ দিবসে সত্যসত্যই সাঁই দর্শন হয়? এটি নিয়ে হিন্দু ও মুসলমান মনীষীদের মধ্যে তেমন কোন বিরোধ নেই। তবে; আত্মজ্ঞানী মনীষীদের মধ্যে ব্যাপক মতোবিরোধ রয়েছে। যেমন; নব্য লালনপন্থীদের অনেকেই বলে থাকে সাঁই দর্শন রজকালেই হয়। অর্থাৎ; রজকালেই সাঁই অবতরণ করে থাকেন। তাদের যুক্তিগুলো হলো, ১ “সময় বুঝে বাঁধাল বাঁধলি না, জল শুকাবে মীন পালাবে, পস্তাবিরে ভাই মনা।” (পবিত্র লালন- ৯২২/১)। ২ “হলে অমাবতীর বার, মাটি রসে হয় সরোবর, সাধু গুরু বৈষ্টম তিনে, উদয় হয় সে যোগের দিনে।” (পবিত্র লালন- ১৬২/২)।
ওপরোক্ত মতের প্রবক্তা বা নব্য লালন গবেষকগণের এরূপ ধারণা যে; একেবারেই ভ্রান্ত বা শতভাগই ভুল, তা প্রমাণের জন্য কুরানের এ বাণীটি তুলে ধরা হলো; “এবং তারা রজকাল সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞেস করতেছে; বলে দাও তা কষ্টকর, অতএব; রজকালে, তোমরা রমণীদের পৃথক রেখো। যে পর্যন্ত তারা পবিত্র না হয়, তাদের নিকটবর্তী হইও না, তারা পবিত্র হলে, কাঁইরে আদেশ অনুযায়ী সেখানে যেও। সত্যই কাঁই প্রত্যাবর্তনকারী ও শুদ্ধাচারীদের অধিক ভালোবাসেন।” (কুরান, বাক্বারা- ২২২)। এছাড়াও; লালন সাঁইজির এ বাণী দুটিই যথেষ্ট; ১.“অমাবস্যা অমঙ্গল তিথি, তাতে মিলন পুরুষের ক্ষতি, জল অমাবস্যায়- ওঠে ডাঙ্গায়, লালন কয় থেকো হুঁশিয়ার।” (পবিত্র লালন- ১০৭/৪) ২.“তুই মদনা চাষা ভাই, তোর জ্ঞান কিছুই নাই, প্রতিপদ বিনে অমাবস্যায়, হাল বয়ে কাল হও কেনে।” (পবিত্র লালন- ১৬২/৩)।
নব্য লালনপন্থীদের এ মতটি যে সম্পূর্ণ রূপেই অযৌক্তিক, অমূলক, যুক্তিহীন ও ভিত্তিহীন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ; রজকালে কেবল রজ ব্যতীত অন্য কোন প্রতীতির আগমন ঘটে না। সেজন্য; এ সময়ে সাঁই-সাধন করা বা সাঁই অন্বেষণ করা সম্পূর্ণই নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে মহাত্মা লালন সাঁইজি লিখে গেছেন, ১ “অমাবস্যা অমঙ্গল তিথি, তাতে মিলন পুরুষের ক্ষতি, জল অমাবস্যায়- ওঠে ডাঙ্গায়, লালন কয় থেকো হুঁশিয়ার।” (পবিত্র লালন- ১০৭/৪)। ২ “তুই মদনা চাষা ভাই, তোর জ্ঞান কিছুই নাই, প্রতিপদ বিনে অমাবস্যায়, হাল বয়ে কাল হও কেনে।” (পবিত্র লালন- ১৬২/৩)। উল্লেখ্য; রজকালকে বাংলা শ্বরবিজ্ঞানে অমাবস্যা বলা হয়।
বিশ্ববিখ্যাত আত্মজ্ঞানী মনীষীদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলেন বলন কাঁইজি ও লালন সাঁইজি। দিগন্ত বিজয়ী ও ক্ষণজন্মা মনীষী দ্বয়ের মতে; ঊষার দ্বিতীয় দিবসই হলো সাঁইদর্শনের জন্য উত্তম যোগ। এ ব্যাপারে লালন সাঁইজির পরিস্কার নির্দেশ হলো, “অমাবস্যা পূর্ণিমা হয়, মহাযোগ সে দিনে উদয়, লালন কয় সময় নির্ণয়, করে করো সাধনা।” (পবিত্র লালন- ৯২১/৪)।
সাঁই আগমনের সময় ব্যাপারে মহাত্মা লালন সাঁইজির মতামত
১ “অমাবস্যার দিনে চন্দ্র থাকে কোন্ শহরে, প্রতিপদে উদয় হয় সে, দৃষ্ট হয় না কেন তারে।” (পবিত্র লালন- ৬০/১)।
২ “অমাবস্যার পর চন্দ্র উদয়, দেখতে যার বাসনা হয়, লালন বলে থাকো সদায়, ত্রিবেণীতে থাকো বসে।” (পবিত্র লালন- ৯৭৬/৪)।
৩ “অমাবস্যার পর প্রতিপদে, দ্বিতীয়ার প্রথম বিভাগে, ভেবে কয় লালন- করে আগমন, সে যোগের দিনে।” (পবিত্র লালন- ৪৮৮/৪)।
৪ “অমাবস্যায় সে রয় ঘুমিয়ে, নাড়া তাকে নেয় জাগিয়ে, লালন কয় কামিনীর ঘরে, যাসনেরে সেথা মানুষ মারে।” (পবিত্র লালন- ২৭৪/৪)।
৫ “একটি চন্দ্র লক্ষ তারা, সারা আকাশ ছেয়ে রয়, অমাবস্যা লাগলে সে চন্দ্র, আবার কোথায় গিয়ে লুকায়।” (পবিত্র লালন- ৬৭৯/৩)।
৬ “মন চোরারে ধরবি যদি মন, ফাঁদ পেতে বস ত্রিবেণে, অমাবস্যার পর পূর্ণিমাতে, বারাম দেয় সেখানে।” (পবিত্র লালন- ৭৩৯/১)।
৭ “শুক্লপক্ষে ব্রহ্মাণ্ডে গমন, কৃষ্ণপক্ষে যায় নিজ-ভুবন, লালন বলে- সে রূপলীলে, দিব্যজ্ঞানী সে জানে।” (পবিত্র লালন- ৭৩৯/৪)।
৮ “হৃদ-কমলে খেলছে আসি, জোয়ার ভাটা দিবা-নিশি, অমাবস্যার পর উদয় শশী, দেখ তার কারসাজি, সুধা বর্ষে রাশি রাশি, কে জানে সে রূপ-লীলে।” (পবিত্র লালন- ৬৮৭/৩)।
সোম (বাপৌরূ)বি চাঁদ, চন্দ্র, ইন্দু, শশী, সোমলতা, জলজলতা, সোম-রসে প্রস্তুত সুধা বিশেষ (প্র) বঙ্গাব্দের সপ্তাহের একটি দিবস বিশেষ (ভাঅ) পালনকর্তা, ঈশ্বর, প্রভু, guardian, রব (আ.ﺮﺐ) (পরি) দেহবিশ্বের পূর্ণিমার প্রথম দুই প্রহর সময়, প্রতিপদ হতে দুই প্রহর সময় (শ্ববি) ১. সুরা, মদ, সারাংশ, সার, রস, সুধা, অমৃত, জ্যেতৎস্না, জল ২. উপাস্য, নারায়ণ, নিধি, নিমাই, নিরঞ্জন, স্বরূপ (আদে) খোদা (ফা.ﺨﺪﺍ), মা’বুদ (আ.ﻤﻌﺑﻭﺪ), মুহাম্মদ (আ.ﻤﺤﻤﺪ), রাসুল (আ.رَسُول) (আপ) কাওসার (আ.ﻜﻭﺛﺮ), ফুরাত (আ.ﻔﺭﺍﺖ) (ইপ) God, nectar, elixir (দেপ্র) এটি; বাংলা শ্বরবিজ্ঞানের পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণীর ‘পালনকর্তা’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ও বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. হিন্দু সাম্প্রদায়িক মনীষীদের মতে; সোম-রসে প্রস্তুত সুধাকে সোম বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; মাতৃগর্ভে সর্বজীবের ভ্রূণ লালনকারী সুমিষ্ট, সুপেয় ও শ্বেতবর্ণের অমৃত-রসকে পালনকর্তা বা রূপকার্থে সোম বলা হয় (বাপৌছ) ঈশ্বর, উপাস্য, চোর, পতিতপাবন, প্রভু, পরমগুরু, মনের মানুষ, রাজা ও স্বরূপ (বাপৌচা) লালন (বাপৌউ) অমৃতসুধা, গ্রন্থ, চন্দ্র, জল, ননি, পক্ষী, ফল, ফুল১, মাণিক ও সুধা (বাপৌরূ) সাঁই সাঁই (বাপৌমূ) পালনকর্তা।
সোমপর্যায় (বাপৌরূ)বি সোমবার, সুধা আগমন সময়, অমৃতসুধা অবতরণ সময়, জীবজল আগমন সময়, জীবনজল অবতীর্ণ হওয়ার মুহূর্ত (প্র) ১. এটি; বঙ্গাব্দের সপ্তাহের একটি দিবস বিশেষ ২. রজস্বলাদের রজস্রাব ঊর্ধ্বগমন হতে পরবর্তী এক প্রহর সময় ৩. আত্মদর্শনে বর্ণিত; আদি ১. শুক্ল ২. শনি ৩. মঙ্গল ৪. সোম ৫. রবি ৬. বুধ ৭. বৃহৎপতি; এ সপ্ত পর্যায়ের একটি পর্যায় (বাপৌছ) প্রতিপদ (বাপৌচা) আদিত্য (বাপৌউ) সকাল (বাপৌরূ) ঊষা ঊষা (বাপৌমূ) প্রথমপ্রহর {বাং.সোম+ বাং.পর্যায়}
সোমপর্যায়ের সংজ্ঞা (Definition of Monday)
১. রজস্বলাদের রজস্রাব হতে পবিত্রতালাভের পর প্রথম ৭দিন সময়কে সোমপর্যায় বলে।
২. মানবদেহে সোম (সাঁই) দেবতার অবস্থানকালীন প্রতিপদের প্রথম ৭দিন সময়কে সোমপর্যায় বলে।
সোমবার (বাপৌরূ)বি সোমদিবস, সোমদিন, সাঁইদিবস (প্র) ১. এটি বঙ্গাব্দের সপ্তাহের একটি দিবস বিশেষ ২. প্রতিপদের প্রথম এক প্রহর সময় বিশেষ ৩. আত্মদর্শনে বর্ণিত আদি ১. শুক্ল ২. শনি ৩. মঙ্গল ৪. সোম ৫. রবি ৬. বুধ ৭. বৃহৎপতি; এ সপ্ত পর্যায়ের একটি পর্যায় (ভাঅ) ঊষা, ভোর, সকাল, প্রত্যুষ, প্রভাত, প্রাতঃ, প্রাতঃকাল, ভোরবেলা, dawn, ‘داون’ (দাওনা), morning, জোহর (আ.ﻆﻬﺮ), ফজর (আ.ﻔﺠﺮ), ফালাক্ব (আ.ﻔﻟﻖ), বারায়াত (আ.ﺑﺭﺍﺀﺓ), সুবহ (আ.ﺼﺑﺢ) (শ্ববি) প্রতিপদ, প্রথমপ্রহর, সাঁই আগমনের সময়, aurora, আওয়াল ওয়াক্ত (আ.ﺍﻮﻞ ﻮﻗﺖ) (বাপৌছ) ‘কোজাগর’ (পাপ) শবে বরাত (ফা.ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ) (দেপ্র) এটি; বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানের পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণীর ‘প্রথম প্রহর’ পরিবারের ‘পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. প্রাতঃকাল বা সকালকে সোমবার বলা হয় ২. রজস্বলাদের পবিত্রতার প্রথম সাড়ে তিন দিন সময়কে প্রথম প্রহর বা রূপকার্থে সোমবার বলা হয় (বাপৌছ) প্রতিপদ (বাপৌচা) আদিত্য (বাপৌউ) সকাল (বাপৌরূ) ঊষা ঊষা (বাপৌমূ) প্রথমপ্রহর {বাং.সোম+ ফা.বার. ﺑﺎﺮ}
শবে বরাত [ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ] (বাপৌরূ)বি কোজাগর, ভাগ্যরজনী, মুক্তিরজনী, নির্বাণরজনী, পাপ বা কলুষ মুক্ত হওয়ার রাত (প্র) পারসিক ও আরব্য পৌরাণিক মনীষীদের মতে; আরবি চান্দ্রবর্ষের শাবান মাসের চতুর্দশতম দিবাগত রাত। এ রাতে মুসলমানরা হালুয়া-রুটি বিতরণ করে ও উত্তম খাবার খায়। ইসলামী পুরাণ মতে; এ রাতে মানবের বার্ষিক খাদ্য, জন্ম-মৃত্য ও আয়ু নির্ধারিত হয় (পরি) রজস্বলা রমণীদের মাসিক ঋতুস্রাব হতে পবিত্রতা লাভের ঠিক পরবর্তী মুহূর্ত মুক্তির প্রথম-প্রহর, ঊষার-প্রথম হতে সর্বশেষ দিন। যেদিন নিরাকার সাঁই বা বিষ্ণু অদৃশ্য জগৎ হতে এসে মানবদেহে সাদা বর্ণের জীব-জল রূপে স্থিতি করেন। সাধকগণ এ প্রহরে সাঁই সাধন করে সারা বিশ্বের লালনপালনকর্তা বা বিশ্বকর্মা সাঁইকে সাদা বর্ণের জলাকারে দর্শনলাভ করে মানব জন্ম ধন্য করেন (শ্ববি) প্রথম প্রহর, সকাল, প্রত্যুষ, ভোর, morning, down, aurora, আওয়াল ওক্ত (আ.ﺍﻮﻞﻮﻗﺖ), ফালাক (আ.ﻔﻟﻖ), বারায়াত (আ.ﺑﺭﺍﺀﺓ), যোহরা (আ.ﺯﻫﺮﺓ), সুবহ (আ.ﺼﺑﺢ) (রূপ্রশ) উষা, প্রতিপদ, সাঁই আগমনের সময় (দেপ্র) এটি; শ্বরবিজ্ঞানের পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণীর ‘প্রথম প্রহর’ পরিবারের ‘পারসিক পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; পারসিক মুসলমান মনীষীদের মতে; আরবি চান্দ্রবর্ষের শাবান মাসের চতুর্দশতম দিবাগত রাতকে শবে বরাত (ফা.ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ) বলা হয় ২. মানবদেহের নয় প্রহর সময়ের মধ্যে প্রতিপদের প্রথম সাড়ে তিন দিন সময়কে বা রজস্বলাদের শুক্লপক্ষের প্রথম সাড়ে তিন দিন সময়কে রূপকার্থে ভাগ্যরজনী, কোজাগর বা শবে বরাত (ফা.ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ) বলা হয় (আপ) জোহর (আ.ﻆﻬﺮ), ফজর (আ.ﻔﺠﺮ) (ইপ) down (বাপৌছ) প্রতিপদ ও সোমবার (বাপৌচা) আদিত্য ও বালেন্দু (বাপৌউ) সকাল (বাপৌরূ) ঊষা ঊষা (বাপৌমূ) প্রথমপ্রহর {ফা.শব. ﺸﺐ+ আ.বরাত. ﺑﺭﺍﺀﺓ}
বরাত [براعة] (বাপৌরূ)বি অকপটতা, উদ্ভাবনকুশলতা, উদ্ভাবনী, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, উদ্ভাবনপটুতা (ভাঅ) দক্ষতা, যোগ্যতা (ব্য্য) আরবি বারায়ত পরিভাষা দ্বারা বাংভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমান মোল্লা-মুন্সিরা কপাল, ললাট, ভাল, ভাগ্য, নিয়তি, অদৃষ্ট, বিধিলিপি, ভাগ্যলিপি, নিয়তি ইত্যাদি বুঝে ও বুঝিয়ে থাকে। তবে; শ্বরবিজ্ঞানে প্রথম প্রহর বা ঊষা বুঝায়। মূল বিষয় হলো; আরবি বারায়াত পরিভাষা দ্বারা কোনকিছু উদ্ভাবন অথবা কোনকিছু উদ্ঘাটন বুঝায় {ফা.বরাত.ﺒﺮﺍﺖ/ আ.বরায়াত. ﺒﺮﺍﻋﺖ}
বাঙালী পৌরাণিক কোজাগর (Bengali mythological Kozagor)
ভূমিকা (Introduction)
কোজাগর হিন্দুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ রজনী। মুসলমান সমাজে এর নাম, মাস ও দিবস সবই ভিন্ন। মুসলমানরা একে ‘শব ই বরাত’, ‘শব ই ক্বদর’ ও ‘শব ই মি’রাজ’ ইত্যাদি নামে ডাকে। তারা চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী এসব রাত উদযাপন করে। বাস্তব বিষয় হলো; দেহ জগতের পঞ্জিকা অনুযায়ী এই সাধন করতে হয়। অন্যথায়; রাষ্ট্রীয় সৌর বা চান্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী এসব অনুষ্ঠান করে কোনো লাভ নেই। তাই; এখানে স্মরণ করা প্রয়োজন যে; সাম্প্রদায়িক উৎসবের অন্তরালেই বাস্তব সাধন লুকায়িত রয়েছে। সাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠানগুলো বাস্তব সাধনের ছায়া মাত্র। যেমন; পর্দায় প্রদর্শিত চিত্র ও বাস্তব মানুষ। সাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠানগুলো যেন হাতির বাইরের দাঁত।
সাধারণ বিবরণ (General details)
এখনও গ্রামের মানুষ এদেশে শরৎকালকে ঘিরে কিছু কিছু সংস্কার মেনে চলে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের মানুষ ভাদ্রের প্রথম ১৩ দিন নতুন বউকে শ্বশুর বাড়ি থাকতে দেয় না। ‘টের্যা’ (আঞ্চলিক শব্দ) (১৩ থেকে এ শব্দের উৎপত্তি) বা ‘অশুভ’ কাটিয়ে আসার জন্য বউকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। আবহমানকাল হতে গ্রাম বাংলার মানুষ এই সময়টুকুকে অশুভ মনে করে। আবার; গ্রামের মানুষ ভাদ্রের ‘ভাদ্রপদা’ পূর্ণিমাকে ‘নষ্ট পূর্ণিমা’ মনে করে।
অন্যদিকে; আশ্বিনের ‘আশ্বিন্যা’ পূর্ণিমাকে বছরের সবচেয়ে শুভ ও সুন্দর পূর্ণিমা মনে করে। এই পূর্ণিমাকে ‘কোজাগর’ বলা হয়। শারদীয় এই পূর্ণিমায় হিন্দু সম্প্রদায়, লক্ষ্মীপূজা পালন করে। শরতের চাঁদকে বলা হয় শরবিন্দু। গ্রামের মানুষকে বলতে শুনেছি; “আশ্বিন, গা করে শিনশিন।” এখনও এসব অতি পুরাতন অনেক ব্রত কেমন করে বাঙালীর ঘরে ঘরে করা হয়; এর উত্তরে বলা যায়; আমাদের সদর অংশটা যতটা পরিবর্তন হয়েছে; অন্তঃপুরটা তাঁর সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয় নি। যেমন; শস্য এলোকেশের মতো গোছা-গোছা লম্বা হয়ে ওঠে; তেমনই হওয়ার কামনায় মেয়েরা কোজাগর লক্ষ্মীপূজার এলোকেশী হয়। আমাদের দেশে ভাদ্র, পৌষ ও চৈত্র মাসে লক্ষ্মীপূজা হয়। এতদ্ব্যতীত আশ্বিন মাসে পূর্ণিমায় কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা হয়। শ্যামাপূজার দিন অমাবস্যায় কোনো কোনো স্থলে লক্ষ্মীপুজা হয়। ঐ দিন কোনো কোনো গৃহস্থের বাড়ী প্রথমে অলক্ষ্মীর পূজা হলে পরে অলক্ষ্মীকে বিদায় করেই লক্ষ্মীপূজা হয়।
আশ্বিন্যা পূর্ণিমাকে বলা হয় ‘কোজাগরী’। কোজাগর শব্দের অর্থ হলো; কঃ (কে) জাগর (জেগে আছে)। অর্থাৎ; “কে কে জাগরে।” শারদীয়া পূর্ণিমাতে যে লক্ষ্মীপূজা হয়; তার প্রচলিত নাম ‘কোজাগরী-লক্ষ্মীপূজা’। তবে; এখনও তা হিন্দুদের নিকট একটি প্রধান পৰ্ব্ব। পূজনীয় স্মার্ত্ত-শিরোমণি রঘুনন্দন তার তিথি তত্ত্বে শাস্ত্রীয় বচন উদ্ধত করে; এই তিথির করণীয় কাৰ্য্যের বিধান বর্ণনা করেছেন। কোজাগর-পূর্ণিমাতে লক্ষ্মী ও ঐরাবতস্থিত ইন্দ্রের পূজা করা হয়। তখন; সবাই; সুগন্ধ ও উত্তম বসন পরে অক্ষক্রীড়া করে রাত্রি জাগরণ করে। কারণ; আশ্বিন মাসের আশ্বিন্যা পূর্ণিমা নিশীতে স্বর্গ থেকে বরদা লক্ষ্মী বলেন; “নারকেলের জল পান করে কে জেগে আছে; আমি তাকে সম্পদ দেব। যে জাগরিত থেকে অক্ষক্রীড়া করে; তাহাকে আমি বিত্ত প্রদান করবো।” তাই; হিন্দুরা নারিকেল ও চিপিটকের দ্বারা পিতৃগণ ও দেবগণের অর্চনা করে এবং বন্ধুগণের সাথে তা ভোজন করে। তারা বিশ্বাস করে; যে নারকেলের জলপান করে অক্ষক্রীড়ায় নিশি অতিবাহিত করে; লক্ষ্মী তাহাকে ধন দান করেন। এই কোজাগরী পূর্ণিমাকে ভিত্তি করেই বাংলাদেশের ফরিদপুর ও ঢাকা অঞ্চলের লক্ষ্মীসরার উৎপত্তি ঘটে।
সমাধান (Solution)
কোজাগর (বাপৌছ)বি লক্ষ্মী পূর্ণিমা; আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথি {সং. কঃ+√ জাগৃ + অ}
কোজাগরী (বাপৌছ)বিণ কোজাগর সম্বন্ধীয় (কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, কোজাগরী পূর্ণিমা) {সং. কোজাগর >}
অক্ষক্রীড়া (বাপৌছ)বি পাশাখেলা, বাইচালি (শ্ববি) কাম৩, সঙ্গম, মৈথুন, সম্ভোগ, lust, ‘شهوة’ (শাহওয়া) (রূপ্রশ) অক্ষক্রীড়া, কামকেলি, নিত্যকর্ম, পাশাখেলা, বপ্রক্রীড়া, বপ্রকেলি, বপ্রক্রিয়া, বাইচালি, journey (ফাপ) বন্দেগি (ফা.ﺒﻧﺪﮔﻰ) (ইপ) সালাত (আ.ﺻﻠﻮﺓ) (ইংপ) prayer, rape, copulation (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’র ‘কাম’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; বাইচালী বা পাশাখেলাকে বাংলায় রূপকার্থে সাধারণত; বাইচালী বা পাশাখেলাকে বাংলায় রূপকার্থে অক্ষক্রীড়া বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; পুরুষ-নারীর যৌনমিলনকে বাংলায় রূপকার্থে শ্বরবিজ্ঞানে; পুরুষ-নারীর যৌনমিলনকে বাংলায় রূপকার্থে অক্ষক্রীড়া বলা হয় (বাপৌছ) তাপন, পাশাখেলা ও বাইচালি (বাপৌউ) আহব, উদ্বন্ধন ও পূজা (বাপৌউ) পর্যটন, ভ্রমণ ও যজ্ঞ (বাপৌরূ) উপাসনা (বাপৌমূ) কাম।
কোজাগরের পরিচয় (Identity of Kozagar)
প্রায় সারা বিশ্বেই হিন্দু ও মুসলমানরা সরকারী অথবা শাস্ত্রীয় পঞ্জিকার দিবস দ্বারা কোজাগর, ‘শব ই বরাত’, ‘শব ই ক্বদর’ ও ‘শব ই মি’রাজ’ ইত্যাদি নিশি পালন করে। এতে কেবল সাম্প্রদায়িক আনুষ্ঠানিকতা রক্ষা হয়। মূল সাধন হয় না। মূল সাধন করতে হলে অবশ্যই সরকারী বা শাস্ত্রীয় পঞ্জিকার দিবস পরিত্যাগ করতে হবে। তারপর; দেহঘড়ি বা দেহ পঞ্জিকার সেই মাহিন্দ্রক্ষণ বের করতে হবে।
হিন্দু সাম্প্রদায়িকরা বছরে একটি বিশেষ নিশিকে কোজাগরী রূপে নির্ধারণ করে। অন্যদিকে; মুসলমান সাম্প্রদায়িকরা বছরে তিনটি বিশেষ নিশিকে কোজাগরী রূপে নির্ধারণ করে। আর তার ভিন্ন ভিন্ন নাম দেয় ‘শব ই বরাত’, ‘শব ই ক্বদর’ ও ‘শব ই মি’রাজ’ ইত্যাদি।
অন্যদিকে দেহ পঞ্জিকা অনুসারে; প্রতিমাসে তিনদিন করে কোজাগরী ধরা হয়। আর তা হলো; ঋতুমতী রমণীদের পবিত্রতার প্রথম দিন হতে গণনা করে তিন দিন। মাসে তিনদিন হলে এক বছরে ৩৬ দিন হয়। এখানে দেখা যাচ্ছে যে; হিন্দুরা বছরে একদিন ও মুসলমানরা বছরে তিনদিন কোজাগর করে। কিন্তু; প্রকৃতভাবে; কোজাগর বছরে ৩৬ দিন। আর তা দেহ পঞ্জিকা অনুযায়ী।
তাই; সাম্প্রদায়িক সমাজের ঠাক-পুরুৎ ও মোল্লা-মুন্সিরা কোজাগর নিশির কোনো কল্যাণ ও মঙ্গল পায় না। আর সাধারণ অনুসারীরা তো আরো দূরের কথা। এসব কারণেই সাম্প্রদায়িক সমাজ থেকে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবৃত্তি, আগ্রাসন ও উগ্রবাদ হ্রাস পায় না; বরং আরো বাড়ে। কোজাগরের কল্যাণ ও মঙ্গল পেতে হলে সাম্প্রদায়িক ঠাক-পুরুৎ ও মোল্লা-মুন্সির সংশ্রব পরিত্যাগ করতে হবে। পাকা গোঁসাই-গুরুর শরণাপন্ন হতে হবে। অথবা পাকা আত্মতাত্ত্বিক দার্শনিকগণের সাহচার্য গ্রহণ করতে হবে। এসব মহান মানুষের সাহচার্য গ্রহণ করার বিষয়টি সব শাস্ত্রে সিদ্ধ। তবে; কোনমতেই সমাজের নামধারী অজ্ঞ গোঁসাই-গুরুর খপ্পরে পতিত হওয়া সমীচীন নয়।
উপসংহারে এসে বলা যায়; কোজাগর বলা হোক আর শবে বরাত (ﺸﺑﻰ ﺑﺭﺍﺀﺓ) বলা হোক; এগুলো বর্তমানে সাম্প্রদায়িক আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তবে এসবের পিছনে চরম বাস্তবতা লুকিয়ে আছে। তাই; যারা সাম্প্রদায়িক এরূপ অনুষ্ঠানকে ঘৃণা করে, অথবা এসব অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফোতোয়া দেয়; তারা নিজেরাও যেমন জ্ঞানান্ধ, তাদের অনুসারীরাও জন্মান্ধ। সাম্প্রদায়িকদের এসব প্রথাগত অনুষ্ঠানের কারণেই মরমীরা বাস্তব অনুষ্ঠান করতে পারেন। অন্যদিকে; সাম্প্রদায়িকদের শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান রূপক বা প্রতীকি কিন্তু মরমীদের অনুষ্ঠানগুলো বাস্তব ও কল্যাণময়ী। বর্তমানকালের সাম্প্রদায়িকদের ঘৃণা না করে, তাদের নিকট উদারভাবে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা তুলে ধরা প্রয়োজন। সাম্প্রদায়িকরা যে বিপথগামী, তা সরাসরী না বলে যুক্তি, দর্শন, ভূগোল, ভূতত্ত্ব, ইতিহাস ও বিজ্ঞান দ্বারা বুঝিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে; নাস্তিকরাও যে বিপথগামী তাও তাদের দর্শন ও বিজ্ঞান দ্বারা বুঝিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে, কারও সাথে সম্মুখ তর্ক বা সম্মুখ সংগ্রামে জড়িয়ে পড়া উচিৎ নয়। বরং সঠিক তথ্যগুলো প্রযুক্তির মাধ্যমে সবার কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। সমাজের সর্ব শ্রেণির মানুষকে তথ্য সচেতন করা প্রয়োজন।
শবে বরাত সবার মঙ্গল বয়ে আনুক।