চিত্রার ভূমিপুত্র
ডি.ডি মল্লিক
আজি থেকে প্রায় শতবর্ষ আগে,
মাতৃগর্ভ থেকে তুমি উঠে ছিলে জেগে,
লাল টুকটুকে সোনার ছেলে,
তুমি সেই লাল।
হয়েছো মহান করেছো অম্লান,
নড়াইল জেলার নাম।
সুযোগ সুবিধা ছিলো না তোমার,
ছিল যে সৎ মা।
ভাতের থালাটি কেড়ে নিয়ে,
তোমায় বলেছে
যেখানে পারিস যা।
ঘর ছেড়েছো
দেশ ছেড়েছো
ছেড়েছো ভিটেমাটি,
তাইতো তুমি মহান হয়েছো
একথা খুবই খাঁটি।
পকেটে ছিলনা পয়সা তোমার,
স্বপ্ন ছিলো যে চোখে
স্বপ্নের শহর কলকাতা তোমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে।
সেখানে পেয়েছো অরুন বাবু,ছিল যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী
স্বপ্ন পূরণে তারাই তোমার সব থেকে শুভাকাঙ্ক্ষী।
ঘুরেছো তুমি দেশ বিদেশ,
হয়েছো মহান আরও
টাকার নেশা পায়নি তোমায় দাম দাওনি কারও।
বিদেশে থেকেও তোমার তুলিতে
ফুটেছে এদেশের ছবি।
তাইতো বলেছে জসিমউদ্দীন এদেশেরই কবি।
তুমি করেছো বাংলাকে মহান,
খেটে খাওয়া যতো মানুষ,
তুলির আঁচড়ে আজও আছে তারা,
হয়নি তো কভু ফানুশ।
ভেবেছো তুমি শিশুদের নিয়ে,
করোনি অবহেলা,
রং তুলি আর ক্যানভাস নিয়ে করেছ শুধুই খেলা।
তোমার মতো মহৎ মানুষ,
পাবে না তো এই দেশ
তোমার জন্য চিনেছে মানুষ ছোট্ট বাংলাদেশ।
তুমি এঁকেছো আদম হাওয়া,
এদেশের জলবায়ু,
তোমার তুলিতে কৃষক পেয়েছে দীর্ঘতম আয়ু।
কখনও বধু কলসি কাঁখে,
কখনও মায়ের মতো,
কখনও আবার স্বামীর সাথে,
কর্মে থেকেছে রত।
তুমি হেঁটেছো শতক্রোশ পথ
হেঁটেছো খালি পায়ে,
জোটেনি তোমার শীতের বস্ত্র,
থেকেছো খালি গায়ে।
তবুও ভেবেছো এদেশেরই কথা
কৃষক সমাজ নিয়ে,
ঝরিয়েছো ঘাম সাদা ক্যানভাসে,
শ্রেষ্ট সময় দিয়ে।
আজ চিরনিদ্রায় শুয়ে আছো তুমি,
চিত্রা নদীর পাড়ে
বহমান চিত্রা আজও বয়ে যায়,
গাছের পাতাটি পড়ে।
তুমি আমাদের গর্ব
এই দেশের গর্ব,
তুমি সেই শিশু লাল।
স্মরণ করি তোমাকে আমরা,
এস এম সুলতান ৷