সাময়িকী.কম
মাঈনুল ইসলাম নাসিম : শুধু মধ্যপ্রাচ্য বা মালয়েশিয়ার দিকে ঝুঁকে না থেকে ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকা সহ বিশ্বের নানা প্রান্তে নতুন নতুন শ্রমবাজার সন্ধানে বাংলাদেশ সরকারের আরো বেশি মনোনিবেশ করা উচিত বলে মনে করেন ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসমাত জাহান। টানা ৭ বছর ধরে ব্রাসেলসে দায়িত্বে আছেন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুদীর্ঘ ৩৪ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অধিকারী এই সিনিয়রকূটনীতিককে লন্ডনে হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্প্রতি ঢাকাস্থ পররাষ্ট্র দফতর।
‘সেইফ মাইগ্রেশন’ ইস্যুতে ২১ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত ইসমাত জাহান বলেন, “ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের সময় বৈঠকে আমাদের সরকারের তরফ থেকে আমরা তাদেরকে অনুরোধ জানিয়েছি সেইফ মাইগ্রেশনের পথ প্রশস্ত করতে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও বৈধ পথে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল মাইগ্রেশনের সুযোগ সম্প্রসারণের পক্ষপাতি”। রাষ্ট্রদূত জানান, “ইউরোপে কাগজপত্র রেগুলার নয় এমন বাংলাদেশীদের এখনই আতংকিত হবার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি, কারণ ঢাকায় সব আলোচনাই ব্রড আউটলাইনে হয়েছে”।
রাষ্ট্রদূত ইসমাত জাহান বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাহেব যখন এখানে এসেছিলেন তখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের তরফ থেকে একই আলোচনা তাঁর সাথেও হয়েছে। রেগুলার নয় এমন মাইগ্রেন্টসদের ফেরত পাঠানো সংক্রান্ত এগ্রিমেন্ট পাকিস্তান ও শ্রীলংকার সাথে আগে থেকেই আছে ইইউ’র। বাংলাদেশের সাথে তারা সবেমাত্র প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে, তবে আল্টিমেটলি একটা এগ্রিমেন্টে আসতে চাইবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এগ্রিমেন্ট হলে তখন যারা ফেরত যাবেন তাদের যথাযথ পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশের চাহিদা অনুয়ায়ী সহযোগিতাও করা হবে ইইউ’র তরফ থেকে এবং ঢাকার বৈঠকে উভয় পক্ষই একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে“।
নিরাপদ অভিবাসনের ওপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সবসময় জোর দিয়ে এসেছে এবং চলতি সপ্তাহে নতুন করে যেভাবে ৫ শতাধিক লোকের সলিলসমাধি হলো সাগরে, এতে করে জ্বলন্ত এই ইস্যুটি এখন আরো প্রায়োরিটি পাবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত ইসমাত জাহান। তিনি বলেন, “যেসব বাংলাদেশী আফ্রিকার বিভিন্ন বিপদসংকুল পথে পথে অপেক্ষায় আছেন সাগর পাড়ি দেবার এমনকি যারা নতুন করে ভিন্নপথে বাংলাদেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের উচিত হবে না মৃত্যুর ঝুঁকি নেবার। জীবনটাকে সুন্দর করার জন্যই যেহেতু সব আয়োজন, তাই ঝুঁকি নেয়াটা যাতে প্রাণের বিনিময়ে না হয়”। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বায়রা আরো উদ্যোগী হয়ে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসনের পাশাপাশি নতুন শ্রমবাজার সন্ধানে যথাযথ কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে, এই আশাবাদ রাষ্ট্রদূত ইসমাত জাহানের।