সাময়িকী.কম
ছবি: সংগৃহীত |
শনিবার ১২ মার্চ ২০১৬: আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদের মরদেহ জাতির শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামী সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বাসসকে জানান, জোটের উদ্যোগে অয়োজন করা হবে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান। পরে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী জানান, তার দুই ছেলে অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ কানাডায় থাকেন। তাঁরা বাবাকে দেখতে দেশে এসেছিলেন। অভিন্ন আজাদ বাবাকে দেখে ১০ মার্চ কানাডা চলে যান। আজ তিনি বাবার মৃত্যু খবর শুনেছেন। দেশের উদ্দেশে তিনি আবার রওনা দিয়েছেন, সোমবার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা। এরপরই রফিক আজাদের দাফন সম্পন্ন করা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ও কবি হারিসুল হক বাসসকে জানান, রফিক আজাদ ৫৮ দিন যাবত লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে তাঁর রক্তচাপ পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে ক্রমান্বয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। আজ দুপুরে তীব্র রক্ত সংক্রমণজনিত কারণে ২টা ১০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, কবি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ও কিডনিসহ নানা দূরারোগ্য ব্যধিতে ভুগছিলেন। তার মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউ থেকে হীমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১৫ জানুয়ারি কবি মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে তাকে বারডেম হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে বিএসএমএমইউতে তাকে ভর্তি করা হয়। বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কবির অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। দিনে দিনে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। বহুমুখী শারীরিক জটিলতাও দেখা দেয়। বিএসএমএমইউ’তে কবি আইসিইউ ইনচার্জ দেবব্রত বণিক ও কামরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী, পাঁচ সন্তান, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদ রাজধানীতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। তাকে এক নজর দেখার জন্য শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গণের ব্যক্তিত্বরা ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ হাসপাতালে ছুটে যান।
কবি রফিক আজাদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ও সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পীকার মো: ফজলে রাব্বী মিয়া, চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গভীর শোক প্রকাশ ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।