সিজনাল জব ভিসায় ইতালীতে এসে ফেরত যাবার ফর্মূলা কি?

ফয়সাল কবির
ফয়সাল কবির - ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
4 মিনিটে পড়ুন

সাময়িকী.কম

Seasonal%2BJOB%2BVISA%2B %2BBangladesh%2BAmbassador%2Bin%2BITALY%2B %2B%2B01 সিজনাল জব ভিসায় ইতালীতে এসে ফেরত যাবার ফর্মূলা কি?


মাঈনুল ইসলাম নাসিম : ভালো বেতনে কয়েক মাসের মৌসুমী কাজের নিমিত্তে অন্যান্য দেশের অভিবাসীরা ‘সিজনাল জব’ ভিসায় ইতালী এসে সিজন শেষে যথাসময়ে যার যার দেশে ফিরে গেলেও ফেরত যান না শুধুমাত্র বাংলাদেশের লোকজন, যাদের অতি লোভে ‘তাঁতী নষ্ট’ হচ্ছে বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজারের। ফলে ২০১৩-২০১৬ টানা ৪ বছর ধরে ইতালীয় শ্রম মন্ত্রণালয়ের খাতায় ‘কালো তালিকাভুক্ত’ হয়ে আছে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এই কলংক থেকে মুক্তির ফর্মূলা সন্ধানে এই প্রতিবেদকের সাথে সম্প্রতি কথা হয় রোমে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহদৎ হোসেনের, যাতে হাইলাইটেড হয় অপ্রিয় সব বাস্তবতা।
 
সিনিয়র কূটনীতিক শাহদৎ হোসেন জানান, “সিজনাল জব ভিসায় ইতালীতে বাংলাদেশের কোটা পুনরায় চালু করতে গত কয়েক বছর ধরেই আমি রাষ্ট্রদূত হিসেবে এখানকার প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরকে বহুবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে ইতালীয়ান অথরিটিকে এভাবে আশ্বস্ত করেছিলাম যে, যদি বাংলাদেশ থেকে ইতালীতে সরকারীভাবে কর্মী প্রেরণ করা যায় তাহলে তারা সিজন শেষে অবশ্যই যথাসময়ে দেশে ফেরত যাবেন, কারণ দালালদেরকে লাখ লাখ টাকা দিয়ে আসতে হবে না তাদের এবং ইতালীতে আসার পর সঙ্গত কারণে সেই টাকা উঠানোর তাড়াটাও সেভাবে থাকবে না। ইতালী সরকারকে বোঝাতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে”।
 
ইতালী যেহেতু মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশ নয় তাই রাষ্ট্রদূত শাহদৎ হোসেনের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চাওয়া হয়, রোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এমনকি ঢাকা থেকে বাংলাদেশের যে কোন অথরিটি কিসের ভিত্তিতে ইতালীকে নিশ্চয়তা দিয়েছে বা দিচ্ছে বাংলাদেশী সিজনাল কর্মীদের সিজন শেষে যথাসময়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের। কারণ ২০০৮ থেতে ২০১২ এই ৫ বছরে যে ১৮ হাজার বাংলাদেশী মৌসুমী কাজের জন্য ইতালীতে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের মধ্য থেকে হাতেগোনা মাত্র ৫০-৬০ জন দেশে ফিরে যান। শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ব্ল্যাকলিস্টেড হবার আগ অবধি দেখা গেছে, যারা বাংলাদেশে থাকাকালীণ কোনদিন কৃষিকাজ করেননি এমনকি বিএ-এমএ পাশ করা অনেকেই এগ্রিকালচারাল জবের সাজানো কন্ট্রাক্টে দালালদেরকে ১০-১২ এমনকি ১৪-১৫ লাখ টাকা দিয়ে ইতালীতে ঢুকে আর ফেরত যাননি।
 
রাষ্ট্রদূত শাহদৎ হোসেনের কাছে সবিনয়ে এটাও জানতে চাওয়া হয়, সরকারীভাবে কর্মী প্রেরণের বাংলাদেশের প্রস্তাব যদি ইতালী গ্রহনও করে তবে যারা বাংলাদেশে কোনদিন লাঙ্গল ছুঁয়ে দেখেননি বা হালচাষ করার সৌভাগ্য হয়নি, তারা ইতালীতে এসে টমোটোর জমিতে জীবন-যৌবন উৎসর্গ করবে কি-না ? নাকি আগেকার স্টাইলে ইচ্ছাকৃতভাবে হারিয়ে ফেলবেন যার যার পাসপোর্ট, হয়ে যাবেন অবৈধ বা পালিয়ে যাবেন অন্য দেশে ? ইতালীর এগ্রিকালচারাল সিজনাল জব ভিসার এই বিষয়টি তো আর এমন নয় যে, বাংলাদেশের শার্ট-প্যান্ট পরা লোকদের ঢাকায় সরকারীভাবে কৃষিকাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ‘সো-কল্ড’ স্বল্পখরচে ইতালীর ফ্লাইটে তুলে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
 
এমনটা করা হলে তথা ফিল্ডে সরাসরি কৃষিকাজের পূর্ব অভিজ্ঞতাবিহীন লোকদেরকে এগ্রিকালচার ভিসায় প্রেরণ করা হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইতালীয় সরকারের সাথে প্রতারণা করার দায় বাংলাদেশ সরকার এড়াতে পারবে কি ? রাষ্ট্রদূত শাহদৎ হোসেন অনেক প্রশ্নেরই সরাসরি কোন উত্তর দেননি এই প্রতিবেদককে। তবে একমত হয়ে তিনি বলেছেন, “সঠিক লোকরা যাতে সিজনাল জব ভিসায় ইতালী আসতে পারেন সেজন্য একটি যৌক্তিক ও গ্রহনযোগ্য ফর্মূলা আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে”। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের সিজনাল জব ভিসার আবেদনের গেজেট চলতি ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছে ইতালীতে, যাতে বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এমনকি ফিলিপাইনের নাম থাকলেও নেক্কারজনকভাবে অনুপস্থিত বাংলাদেশের কোটা।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
অনুসরণ করুন:
কর্মজীবী এবং লেখক
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!