বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বছরের সবচেয়ে বড় আয়োজন বই মেলা শুরু হতে আর মাত্র দুদিন বাকী। কিন্তু লেখক-প্রকাশকদের অনেকের মধ্যে চাপা শংকা কাজ করছে বইমেলার নিরাপত্তা নিয়ে। এই একুশের বই মেলাতেই গত বছর জঙ্গী হামলায় খুন হয়েছিলেন লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়। মেলা প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে বেরিয়ে আসার পর অভিজিৎ রায় এবং তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা হামলার শিকার হন। গত বছর একই ভাবে হত্যা করা হয় আরও কয়েকজন ব্লগার এবং প্রকাশককে। স্বাভাবিকভাবেই এবারের বই মেলাকে ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।
বই মেলায় লেখক-প্রকাশকদের নিরাপত্তার জন্য কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ?
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান জানিয়েছেন এবারে মেলার পাশের সড়কগুলোতে পুলিশ এবং র্যাবের টহল জোরদার করা হবে। তাছাড়া মেলার আশপাশের রাস্তাগুলোতেও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হবে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন কোন বইকে কেন্দ্র করে যাতে কোন উত্তেজনা তৈরী না হয় সেজন্য তারা প্রকাশকদের সতর্ক থাকতে বলবেন। জঙ্গীরা যেভাবে এখন প্রকাশকদেরও হামলার টার্গেট করেছে, সে কারণে প্রকাশকরা এবার বই প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক।
শব্দশৈলী নামের একটি প্রকাশনার সংস্থার কর্ণধার ইফতেখার আমিন বলেন কোন বইটি প্রকাশ করা উচিত হবে আর কোনটি প্রকাশ করা উচিত নয়, সে বিষয়টি প্রকাশকরা ভাবছেন।
মি: আমিন বলেন, “ মুক্তচিন্তা বলতে যে কথাটা বোঝায়, সে ধরনের বই প্রকাশের ক্ষেত্রে ভাবছি যে বইতে এমনি কিছু আছে কিনা যেটি কোন ব্যক্তি বা ধর্মকে আঘাত করে।”
প্রকাশক মি: আমিন এমন কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চাননা যেখানে তার জীবন নিয়ে শংকা তৈরী হতে পারে।
লেখক এবং প্রকাশকরা বলছেন সব ধরনের লেখা নিয়ে সংশয় থাকেনা। কোন বইকে যদি ‘ইসলাম ধর্ম বিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তাহলে সে বইয়ের লেখক এবং প্রকাশকের জীবন নিয়ে আশংকা তৈরী হতে পারে।
মুস্তাফা পান্না নামের একজন লেখক বলেন , “ দু”ধরনের লেখক আছেন। অনেকে আছেন শুধু বিনোদনের জন্য লিখেন। আবার অনেকে তার লেখার মাধ্যমে তাদের দর্শন বা দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে চান।”
যেসব লেখক তাদের প্রকাশনার মাধ্যমে রাজনৈতিক বা অন্যান্য বিষয়ে তাদের দর্শন তুলে ধরতে চান, তারা সবসময় ঝুঁকিতে থাকেন বলে মি: পান্না উল্লেখ করেন।